মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা নিয়ম ভাঙার অভিযোগে দণ্ডিত রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ৫১২ দিন কারাগারে কাটানোর পর মুক্তি পেয়েছেন।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাজধানী ইয়াংগনের একটি জেলখানা থেকে মঙ্গলবার সকালে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসেন সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) ও কিয়াও সো ও (২৮)।
রোহিঙ্গা নিপীড়নের তথ্য সংগ্রহের সময় গ্রেপ্তার এই দুই সাংবাদিক বরাবরই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে এসেছেন। তাদের মুক্তির দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সব দাবি মিয়ানমার সরকার এতদিন উপেক্ষা করে এসেছে।
জজ আদালত রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে সাত বছরের সাজা দেওয়ার পর হাই আদালত এবং আপিল বিভাগেও তা বহাল থাকে। আপিল বিভাগের ওই রায় আসার মাত্র দুই সপ্তাহের মাথায় দুই সাংবাদিকের মুক্তির সংবাদ এল।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর বর্ষবরণের মওসুমে মিয়ানমারে প্রেসিডেন্টের ক্ষমায় বিপুল সংখ্যক বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। এবছর সেই প্রক্রিয়া শুরু হয় এপ্রিল থেকে। এর আওতায় অল্পসংখ্যক ৩হাজার বন্দির সঙ্গে সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সোকেও মিয়ানমার সরকার মুক্তি দিয়েছে।
যে কারণে গ্রেফতার হন দুই সাংবাদিক: মিয়ানমারের রাখাইনে গণহত্যার একটি ঘটনা খোঁজ করেছিলেন রয়টার্সের এই দুই সাংবাদিক। পরে তাদের আটক করে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট লঙ্ঘনের নালিশ আনা হয়। রয়টার্স দাবি করে, রাখাইনে দশ রোহিঙ্গাকে হত্যার বিষয়টি উদ্ঘাটন করেন এই দুই সাংবাদিক। সে জন্যই তাদের আশা ছিল যে দুই সাংবাদিকের তৎপরতা জনস্বার্থ হিসেবেই বিবেচিত হবে। রয়টার্সের প্রধান সম্পাদক স্টিফেন জে অ্যাডলার বলেন, আমরা অনুসন্ধানী রিপোর্টটি প্রকাশ করেছিলাম, কারণ, এটি নিয়ে বিশ্বব্যাপী আগ্রহ ছিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে যা ছিল: উত্তর রাখাইনের ইনদিন গ্রামে সেনাবাহিনী ও সামান্য গ্রামবাসী মিলে সারিবদ্ধভাবে একদল রোহিঙ্গাকে বসিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর। ওই ঘটনাই উঠে এসেছিল রয়টার্সের প্রতিবেদনে, যার তথ্য-উপাত্ত ওই দুই সাংবাদিকই সংগ্রহ করেছিলেন। রয়টার্স দাবি করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের এটিই প্রথম কোনো প্রমাণ।