নদ্মা নদীতে অবৈধভাবে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন খনন যন্ত্রদিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বালু উত্তোলন করে আসছিলা প্রভাবশালী একাধিক মহল। নদীতে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছিল রক্তক্ষয়ী সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি। এ পরিস্থিতিতে সোমবার বিকেলে সেখানে অভিযান চালায় গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ। এ সময় এক কোটি টাকা মূলের একটি খনন যন্ত্র জব্দ ও ৪ জনকে আটকা করে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে পুলিশী অভিযানে কোটি টাকা মূল্যের ড্রেজার মেশিন জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) এজাজ শফী।
জানা যায়, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর ও ফরিদপুর সদরের নিকটবর্তী স্থানে পদ্মা নদীতে বালু উত্তোলন নিয়ে তিন জেলার একাধিক প্রভাবশালী গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছিল। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা লালন ফকির, আজাদ, হিমায়েতউল্লাহ ও ফরিদপুরের মিন্টুসহ আরো বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তি এই বালু ব্যবসার সাথে জড়িত। গত এক সপ্তাহে পদ্মা নদীতে প্রভাব বিস্তার ও বালু উত্তোলন নিয়ে দ্বন্দ্বে কোটি টাকা মূল্যের আরো দু’টি খনন যন্ত্র তলা কেটে ডুবিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। এ পরিস্থিতিতে পদ্মায় সাংঘর্ষিক অবস্থা ও প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা দেখা দেয়। পদ্মা নদীতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি এজাজ শফীর নেতৃত্বে বিপুল সংখক পুলিশ সোমবার বিকেলে পদ্মা নদীর দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের ভাটিতে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের চর মজলিশপুর পাকড়দিয়া এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন পালিয়ে গেলেও ৪ জনকে গ্রেফতার ও বিশাল আকৃতির ওই খনন যন্ত্রটি জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় বাজার সংলগ্ন ওহাব মৃধার ছেলে লুৎফর মৃধা (৪০), হরিরামপুর উপজেলার বাহেরচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের শফিক বিশ^াসের ছেলে খোকন বিশ^াস (২৯), বালিয়াকান্দি গ্রামের মৃত জয়নদ্দিনের ছেলে সামছুল ইসলাম (৬০), চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার দশানী উত্তর পাড়া গ্রামের মো. আবুল কালামের ছেলে রায়হান (২০)।
গ্রেফতার হওয়া রায়হান জানায়, তারা প্রতিদিন মুজুরী হিসেবে নিয়ে এই খনন কাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। দুইদিন আগে ২০/২৫ জন মানুষ অস্ত্র-সন্ত্র নিয়ে এসে এখানে খনন কাজে নিয়োজিত আরেকটি বিশাল আকৃতির খনন যন্ত্র তলা কেটে ডুবিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া সেখানে থাকা শ্রমিকদের মারধরও করেছে। কিন্তু কি কারণে কেন কারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি।
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি এজাজ শফী জানান, শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙের আশঙ্কায় উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পদ্মা নদীর দূর্ঘম এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে আটক ব্যাক্তি ও পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই ওলিউর রহমান বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। আটককৃতদের মঙ্গলবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হয়েছে।