দীর্ঘ আট বছর পর যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংযোজন হতে যাচ্ছে অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। গত ২ মে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ লিটুর হাতে অ্যাম্বুলেন্সের চাবি হস্তান্তর করেন। কয়েক দিনের মধ্যেই যশোর-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ উদ্বোধনের পরই অ্যাম্বুলেন্সটি রোগীর প্রয়োজনে ব্যবহার করা হবে।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালে বর্তমান দু’টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। তবে তাদের অবস্থা বড্ড নাজুক। বেশির ভাগ সময় গাড়ি দুটির ঠাঁই হয় গ্যারেজে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাসপাতাল চত্ত্বরে গড়ে উঠে অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড। আর এ কাজে প্রতি মাসে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকদের দিতে হচ্ছে সিন্ডিকেটে টাকা। ওই চাঁদার টাকা দিতে অনীহা নেই অ্যাম্বুলেন্স চালকদের। কেননা হাসপাতালে বিপদে পড়া মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে চালকরা বাড়তি অর্থ হাতিয়ে নিতেই এখানে আস্তানা গেড়েছেন। হাসপাতাল থেকে রোগী অথবা লাশ নিতে হলে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে সেখানে অবস্থানরত অ্যাম্বুলেন্সযোগে নিতে হয়। এই সিন্ডিকেটের বাইরে কোনো অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালের মধ্যে আনার কোনো সুযোগ নেই। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স দুটি প্রায় সময় বিকল থাকায় রোগীরা বাধ্য হয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে বাড়তি টাকা দিয়ে রোগী নিয়ে যাতায়াত করে থাকে। নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি চালু হলে রোগীদের অনেকটা সুবিধা হবে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের সদস্যরা হাসপাতালে যত্রতত্র গাড়ি রেখে বিভিন্ন ওয়ার্ড, লাশকাটা ঘরসহ জরুরি বিভাগের আশপাশে ঘোরাফেরা করে থাকে খরিদ্দার সংগ্রহের জন্যে। এতে হাসপাতালে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া এখানে সব সময় মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, চিকিৎসক সেবিকা ও রোগীর স্বজনেরা আসা-যাওয়া করে। এলোমেলোভাবে অ্যাম্বুলেন্স রাখার কারণে হাসপাতালের সকল কর্মকা-ে সমস্যা হচ্ছে। আর অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে সিন্ডিকেটের সদস্য ও অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা লাভবান হচ্ছেন। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কেননা হাসপাতালে বিপদে পড়া মানুষদের জিম্মি করে বাড়তি ভাড়ার টাকা আদায় করা হচ্ছে। তবে সকলের ধারণা হাসপাতালের উন্নতমানের নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি চালু হলে রোগীরা অর্থিকভাবে লাভবান হবেন। বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের হাত থেকে তারা মুক্তি পাবেন।
এ ব্যাপারে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ লিটু জানান, বহু দিনের স্বপ্ন ছিলো যশোর বাসীর নতুন একটি অ্যাম্বুলেন্স। অবশেষে সেই আশা পুরণ হয়েছে। হাসপাতালে এখন মোট তিনটি অ্যাম্বুলেন্স হলো। রোগীরা যাতে তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের সুধিবা ভোগ করতে পারে সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হবে। তার উদ্যোগে হাসপাতাল চত্ত্বর থেকে অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হয়েছে। পুনরায় যাতে তারা আবার হাসপাতালে প্রবেশ না করতে পারে তার জন্য হাসপাতাল প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অতি দ্রুত নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি উদ্বোধনের ব্যাপারে যশোর-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের সাথে তিনি বলে বলেছেন। তিনি সময় দিলেই উদ্বোধনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি।