যশোরের বেনাপোলের পাটবাড়ি গ্রামের আবদুস সালাম হত্যা মামলায় আটক জাহাঙ্গীর আলম জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। মঙ্গলবার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সাইফুদ্দীন হোসাইন আসামির এ জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। জাহাঙ্গীর আলম বেনাপোলের শিকড়ি গ্রামের মোক্তার আলীর ছেলে। নিহত সালামের স্ত্রীর পরামর্শে সে পরিকল্পিতভাবে পানিতে চুবিয়ে সালামকে হত্যা করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
জাহাঙ্গীর আলম জবানবন্দিতে জানিয়েছে, সে ইজিবাইক চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করে। নিহত আবদুস সালামের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে তার ছোট বেলায় প্রেম ছিল। সাবিনার বিয়ের পর সে নিজেও বিয়ে করে। তিন বছর আগে সাবিনা তার ইজিবাইকে করে শ্বশুর বাড়ি যায়। এরপর সাবিনা তার মোবাইল নম্বর নিয়ে প্রায় কথা বলতো। এ ভাবে তাদের মধ্যে আবারও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জাহাঙ্গীর কৌশল অবলম্বন করে পারিবারিকভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলে উভয়ে বাড়িতে যাতায়াত করত। এরমধ্যে জাহাঙ্গীরকে সাবিনা তার স্বামী আবদুস সালামকে হত্যার পরমর্শ দেয়। এরপর তারা বিয়ে করবে বলে জানায়। এ কথায় জাহাঙ্গীর আলম কৌশল খুজতে থাকে সালামকে হত্যা করার। গত ৪ মে আবদুস সালাম মোবাইল করে তার কাছে কিছু টাকা ধার চায়। জাহাঙ্গীর আলম তাকে টাকা দেয়ার কথা বলে দেখা করতে বলে। এরপর জাহাঙ্গীর একটি পানের মধ্যে ঘুমের ঔষুধ মিশিয়ে আবদুস সালামকে খাইয়ে দেয়। শার্শার পান্তাপাড়া গ্রামের আমড়াখালি রেল ব্রিজের কাছে আসলে আবদুস সালাম ঘুম কাটাতে হাতমুখ ধুতে ব্রিজের নিচে নদীর পাড়ে যায়। জাহাঙ্গীর তখন তার সাথে যেয়ে পানিতে চুবিয়ে তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় বলে জবানবন্দিতে জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ মে বিকেলে আবদুস সালাম দোকান থেকে বের হয়। রাতে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন সকালে স্বানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে আমড়াখালি রেল ব্রিজের নিচের ডোবা থেকে আবদুস সালামের লাশ উদ্ধার করে স্বজনেরা। এ ব্যাপারে নিহতের ভাই আসলাম হোসেন বাদী হয়ে অপরিচিতদের আসামি করে বেনাপোল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিহতের মোবাইলের কললিস্ট ধরে হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করে।