কারও বাবা নেই, কারও নেই মা, কেউ কেউ হারিয়েছে বাবা-মা দু’জনকেই। একেক জনের জীবনের গল্প একেক রকম। এদের পরিবারের কোনো খোঁজ নেই, এদের মধ্যে কেউ পরিত্যক্ত, আবার কেউ দুর্ভাগ্যক্রমে পরিবার বিচ্ছিন্ন মানুষ। এদের কারও কারও পরিবারও নেই, আনন্দও নেই। এতিমখানাই তাদের ঠিকানা।
প্রতি বছর ঈদ আসে ঈদ যায়। এসব এতিমের ইচ্ছে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে, আনন্দ করতে, স্নেহ ভালোবাসার মধ্যে বেড়ে উঠতে, কিন্তু সে সুযোগ কোথায়? মাগফিরাতের মাস রমজানেও ভালো ইফতার জোটে না তাদের। কোনো দিন শুধু পানি মুখে দিয়েই ইফতার করে তারা। নামাজ শেষ রাতের খাবার ভাতের সঙ্গে একটু সবজি দিয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সেহরির কথা বলাবাহুল্য। বৃত্তবানদের সহযোগিতা পেলে এ রমজান মাসে ভালো কিছু দিয়ে ইফতার করতে পারত এ অবহেলিত এতিমরা। এতিমরা রোজা রাখছে।
রমজান মাসে শিশুদের ভালো খাবার জোগানো কঠিন হয়ে পড়েছে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালকের। ফলে তারা পড়েছেন বেকায়দায়। তাই প্রতিষ্টানের পক্ষে বৃত্তবানদের কাছে সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। রাজশাহী শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার পূর্বে বড়াল নদের তীর ঘেঁষে বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার চকসিংগা গ্রাম। এই গ্রামে গড়ে উঠেছে ছোট্ট একটি এতিমখানা ও ক্বওমী মাদ্রাসা। নাম দেয়া হয়েছে কাসেমুল উমূল ক্বওমী মাদ্রাসা ও এতিম খানা। বর্তমানে এতিমের সংখ্যা ১৭৫ জন।
মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় এতিমখানা পরিচালনা হয়ে আসছে। কিন্তু চলমান রমজান মাসে বেকায়দার রয়েছেন এতিমদের নিয়ে পরিচালান কমিটি ও প্রধান শিক্ষক।
চকসিংগা এতিমখানা ও মাদ্রাসার পরিচালক আলহাজ¦ জমির উদ্দীন বলেন, এ প্রতিষ্টানকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হয়না। মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় পরিচালনা হয়ে আসছে। তবে এ বছর এতিমরা একটু কষ্টে আছে।
চকসিংগা এতিমখানা ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা কামরুজ্জামান বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর এতিমদের নিয়ে কষ্টে পার করছি। এ বছর ১৭৫ জন এতিমদের নিয়ে কোন হালে দিন পার করছি। এক সন্ধ্যা ভালো তো আরেক সন্ধ্যা মন্দ এভাবে চলছে। তবে আর্থিক অনুদান পেলে এ রমজান মাসে এতিমদের নিয়ে ইফতার ও সেহরী ভালোভাবে করা যেত।