সাতক্ষীরার কলারোয়ার দেয়াড়া ইউনিয়নে ১০টাকার চালের কার্ডধারীরা এতোদিন চাল পেলোও অদৃশ্য কারণে এপ্রিল-১৯ মাসের চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে তারা। ভুক্তভুগিদের অভিযোগ দেয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ডিলারদের কারসাজিতে তাদের চাল দেয়া হয়নি। প্রকৃত কার্ডধারীদের চাল না দিয়ে এপ্রিল মাসের চাল ইউপি চেয়ারম্যান ডিলারদের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করে আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনায় বৃহষ্পতিবার (৯মে) দুপুরে শতাধিক নারী-পুরুষসহ ভূক্তভোগিরা কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ ও গণস্বাক্ষর করে। পরে তারা উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। একই সাথে কলারোয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে তারা। ওই ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ৩শতাধিক কার্ড প্রদর্শন করে তারা বলেন-এই কার্ডগুলোর ব্যক্তিরা এতোদিন প্রতিমাসে ১০টাকা কেজি দরের চাল উত্তোলন করতে পারলেও গেলো এপ্রিল মাসের চাল উত্তোলন করতে গেলে তাদের কার্ড বাতিল করা হয়েছে বলে জানানো হয়। তদন্ত সাপেক্ষে ডিলারশিপ বাতিল ও বিষয়টি দ্রুত নিরসণ করে তারা অবিলম্বে প্রকৃত কার্ডধারীদের চাল প্রদানের দাবি জানান তারা। একই সাথে দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কৃর্তপক্ষের প্রতি আহবান জানান। দেয়াড়ার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মহিলা ও পুরুষ কার্ডধারীরা গণজমায়েত করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে। সেখানে গণস্বাক্ষর করে। হাতে নিজেদের কার্ড উঁচু করে প্রতিবাদ করেন। এ সময় তারা বলেন-আমরাই প্রকৃত কার্ডধারী, আমাদের সাথে ছলনা করা হয়েছে। পরে হাইস্কুল মার্কেটস্থ প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত কয়েক শতাধিখ কার্ডধারীসহ আরো উপস্থিত ছিলেন দেয়াড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদি হাসান, ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তোজাম্মেল হক, ইউনিয়ন আ.লীগের সহ.সভাপতি খায়রুল বাসার, আ.লীগ নেতা ওবায়দুল খান, আতিয়ার রহমান সরদার, মুনছুর আলী সরদার, নাছিমা খাতুন প্রমুখ। এ বিষয়ে দেয়াড়া ইউনিয়নের ডিলার খোরদো বাজারের আবদুর রহমান মিঠু বলেন- ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা থেকে নতুন করে যে ৫৬০জনের তালিকা দেয়া হয়েছে তাদের চাল দেয়া হয়েছে। কার্ড সংযোজন-বিয়োজনের ক্ষমতা তার নেই। একই বিষয়ে অপর ডিলার পশ্চিম খোরদোর মাস্টার ইবাদুল্লাহ জানান- চেয়ারম্যান ও মেম্বররা নতুন করে যে তালিকা দিয়েছেন সে অনুযায়ী ৫৬০জন কার্ডধারীকে চাল দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান-মেম্বররা আগের কার্ডধারীদের কার্ড বাতিল করায় তাদের চাল দেয়া হয়নি। কেন কার্ড বাতিল করা হয়েছে সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন। দেয়াড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান মফে জানান- এই প্রকল্পটি গত ৩বছর যাবত চলমান ছিলে বিধায় এসময়ের মধ্যে যাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে তাদের নাম কর্তন করে নতুন করে অসহায় ব্যক্তিদের নামে কার্ড বরাদ্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইউএনও এবং ট্যাগ অফিসারের সম্মতি নিয়েই সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরো জানান- ৩শতাধিক নয়, ১শ’র একটু বেশি নতুন কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান- তথ্য সঠিক হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি তাৎক্ষনিক সরকারি খাদ্যগুদামের ইনচার্জ ও খাদ্য কর্মকর্তাকে তলব করেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন- বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো এবং সমাধানের চষ্টা করবো।