স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি বিএনপি নেত্রীর সমালোচনা করে বলেন, খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং একটি দলের সভানেত্রী। অথচ তিনি দুর্নীতি করার দায়ে আজ জেল খাটছেন। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি দুর্নীতিবাজ হন তাহলে সেই দেশের কি অবস্থা দাড়ায়? আর যেই দলের সভানেত্রী দুর্নীতিবাজ সেই দলেরই বা কি দশা দাড়ায়?
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার দেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর শুরু করেছে। এর আওতায় অবহেলিত ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে প্রতিমাসে একটি ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা যে একজন জনদরদী নেত্রী এবং তাঁকে ভোট দিলে যে সাধারণ মানুষ সুখে থাকে এই কর্মসূচি তার প্রমাণ।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক পরিচালিত ফরিদপুর সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় দ্বারা বাস্তবায়িত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বয়স্ক, বিধবা ও অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
শনিবার দুপুরে ফরিদপুর শহরের বদরপুরে অবস্থিত আফসানা মঞ্জিলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজর করা হয়।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতাগ্রহণের সময় দেশের মাথাপিছু আয় ছিলো ৫৩৬ ডলার। এখন সেই মাথাপিছু আয় বেড়ে ২১শ’ ডলারে উন্নীত হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাই বিশ্বে একমাত্র নেত্রী যিনি নির্দিষ্ট দিনতারিখ ঠিক দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করছেন। এটি কি অসম্ভব মনে হচ্ছে কারো কাছে? কিন্তু বাস্তবতা হলো, শুধুমাত্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এটি সম্ভব।
তিনি সকলকে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হোন, আমরাও ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারবো।
তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধীদের সমালোচনার ব্যাপারে বলেন, অনেকে বলেন আমরা নাকি ভোটের আগের রাতের আঁধারে ভোট কেটে বাক্স ভরে জিতেছি! আমরা যদি সত্যি সত্যিই ভোট কেটে বাক্স ভরেই জিতে থাকি তাহলে বিএনপি কেনো রাতের আঁধারে ভোটের বাক্স ভরতে পারলো না? আমরা কি তাদের বাঁধা দিয়েছিলাম? আমরা না হয় বাক্স ভরলাম, তোমাদের বাক্স খালি কেনো? তোমাদের ভোট গেলো কোথায়?
তিনি বলেন, ভোট পেতে হলে জনগণের পাশে থাকতে হয়। বিএনপি জনগণের পাশে ছিলো না বলেই তারা ভোট পায়নি। অপরদিকে, শেখ হাসিনা একজন জনদরদি নেত্রী বলেই তাকে জনগণ ভোট দিয়েছে। এ সময় তিনি আগামি ২০২৪ সালের নির্বাচনেও শেখ হাসিনার সাথে থেকে সকলকে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান বলেন, যাদের আসলে পরিবারে বোঝা মনে হতো কিন্তু তারা যে মোটেও পরিবারের বোঝা নন বরং সমাজেরই অংশ; এটি বোঝানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বয়স্ক, বিধবা ও অসুস্থ প্রতিবন্ধী ভাতা উপহার স্বরুপ আপনাদের দিয়েছেন।
এসময় আরো বক্তব্য দেন সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক মোল্যা, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচলক এসএম আলী আহসান, উপ সহকারী পরিচালক নুরুল হুদা, বিধবা ভাতাভোগী রাশেদা বেগম ও বয়স্ক ভাতাভোগী শেখ আবদুল হক।
বিধবা ভাতাভোগী রাশেদা বেগম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আগে কোন সরকারই আমাদের এভাবে সহায়তা করেনি। শেখ আবদুল হক বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বলেই জীবনের শেষ বয়সে এসে ভাতা পেলাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফরিদপুর সদর উপজেলায় ১ হাজার ৮৭১ জন ভাতাভোগীর মাঝে ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৮শ’ টাকা ভাতাবাবদ প্রদান করা হয়। এরমধ্যে বয়স্ক ও বিধবা ভাতাপ্রাপ্তগণ প্রতি মাসে ৫শ’ টাকা করে এবং অসুস্থ শারিরীক প্রতিবন্ধীরা প্রতিমাসে ৭শ’ টাকা করে ভাতা পান। বর্তমানে ফরিদপুর সদর উপজেলায় ১১ হাজার ৮শ’ ৬৯ জন বয়স্ক ভাতা, ২ হাজার ১শ’ ৮৫ জন বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা এবং ২ হাজার ৬শ’ ৭৮ জন শারিরীক প্রতিবন্ধীকে ভাতা পাচ্ছেন। এবাবদ তাদের মাঝে এবছর ৮ কোটি ৯৭ লাখ ২১ হাজার ৬শ’ টাকা প্রদান করা হবে।