রাজবাড়ী সদর উপজেলা পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণদিয়া গ্রামে পাশাপাশি দুটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। হাটা দূরত্বে পাঁচ মিনিটের পথ। এরমধ্যে পরে নির্মিত সেতুতে কোনো সংযোগ নেই। নির্মাণের তিনবছর পেরিয়ে গেলেও সড়ক তৈরিতে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রমও নেই। এতে করে সেতুটি ভালোভাবে কাজে লাগছে না এলাকাবাসীর।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উদ্যোগে সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এই সেতু নির্মাণ করা হয়। পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণদিয়া সিরাজ মাস্টারের বাড়ির পাশে খালের উপর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। এই সেতুটি লম্বায় ২৮ ফুট। এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় ২৩ লাখ দুইহাজার নয়শ তিন টাকা। পরের বছরর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে একই গ্রামে ফজের উদ্দিনের বাড়ির পাশে আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ২৪ ফুট দৈর্ঘের এই সেতুর নির্মাণ ব্যায় ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৪৪৮ টাকা। নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সদর উপজেলার রায়নগরের মেসার্স খন্দকার এন্টারপ্রাইজ। স্থানীয় সাংসদ কাজী কেরামত আলী এই সেতু উদ্বোধন করেন। এক সেতু থেকে আরেক সেতুতে পাঁয়ে হেটে যেতে সময় লাগে পাঁচ মিনিট।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণদিয়া বাজার থেকে খানখানাপুর বাজারের দিকে একটি পাকা রাস্তা চলে গেছে। রাস্তার পশ্চিম পাশ দিয়ে একটি খাল। খালের ওপর এক বছরের ব্যবধানে দুটি সেতু তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সেতু দুটির দূরত্ব একশ মিটারের মতো। প্রথমে তৈরি করা হয় সিরাজ মাষ্টারের বাড়ির সামনে সেতু। তবে ওই সেতুর সাথে সংযোগ আছে। পরে নির্মাণ করা সেতুটি মাঠের দিকে চলে গেছে। তাতে কোনো সংযোগ সড়ক নেই। তবে একটি সরু পায়ে হাটা রাস্তা কিছুদুর গিয়েছে।
ব্রাক্ষ্মণদিয়া গ্রামের বাসিন্দা জাকির আলী মোল্লা বলেন, এই সেতু নির্মাণ করায় আমাদের সুবিধা হয়েছে। আমাদের এখন দ্রুত বাড়ি চলে আসতে পারি। তবে সেতু থেকে একটি ভালো রাস্তা তৈরি করা দরকার। রাস্তা হলে আমরা আরো ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারবো। ভ্যান বা ছোট যানবাহনও নিয়ে যাওয়া যাবে। আমাদের শারীরিক শ্রম আরো কমে আসবে।
মহিষাখোলা গ্রামের বাসিন্দা ইউসুব আলী খান বলেন, সেতু দুটো কাছাকাছি। এতো কাছাকাছি সেতু দুটি কেনো তৈরি করা হয়েছে সে বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করবো না। কারণ এটি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ব্যাপার।
পাঁচুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, এসব সেতু নির্মাণ করা হয় বিভিন্ন ধরণের প্রকল্প থেকে। আমাদের কাছে প্রকল্প চাওয়া হয়। আমরা স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রকল্প পাঠিয়ে দেই। দুটো সেতুর দূরত্ব কম হলেও প্রয়োজন রয়েছে। পরে নির্মিত সেতুর পাশ দিয়ে ছোট রাস্তা রয়েছে। ওই সেতু হওয়ার ফলে স্থানীয় চাষীরা মাঠ থেকে ভালোভাবে ফসল নিয়ে আসতে পারে। এতে কৃষকদের অনেক সুবিধা হয়েছে। তাছাড়া আমরা সেতুর পাশ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেছি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাঈদুজ্জামান খান বলেন, ওই সেতু দুটো খুব কাছাকাছি স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে। এই বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা এই বিষয়ে এখন সতর্ক হয়েছি। সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানোর আগে সরেজমিনে খুব ভাবে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরণের সমস্যা না হয় এবং প্রতিটি ইউনিয়নে সেতু বন্টন সুষমভাবে হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খেয়াল রাখা হবে।