কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার বিলপাড় গজারিয়া নামক স্থানে চলন্তবাসে নার্স শাহিনুর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় রবিবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ সময় অতিরিক্ত ডিআইজি আসাদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার ভৈরব রেজুয়ান দিপু উপস্থিত ছিলেন। তারা ঘটনাস্থল বিলপাড় গজারিয়ায় প্রত্যক্ষদর্শী ভ্যানচালক জাকির হোসেনকে(১৯), চাউল ব্যবসায়ী মোশারফ, মামলার বাদী গিয়াস উদ্দিন ও সততা ফার্মেসীর মালিক হাবিবুর রহমান ও হাওয়া ফার্মেসীর মালিক খায়রুল ইসলামকে বিলপাড় গজারিয়া ও পিরিজপুর বাজারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ভ্যানচালক জাকির হোসেন জানান, সোমবার রাত ৮টার দিকে অটোরিকশায় চাউলের বস্তা নিয়ে কটিয়াদী থেকে গজারিয়া বাজারে যাচ্ছিলাম। ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহা সড়কের বিলপাড় গজারিয়া নামক স্থানে স্বর্ণলতা যাত্রীবাহী একটিবাস রাস্তার মাঝ খানে দাঁড়ানো। বাসের দরজার পাশে রাস্তার উপর আড়াআড়ি একটি মহিলাকে মূমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। আমি বাসের চালক ও সহযোগিকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে মেয়েটি গাড়ি থেকে লাফ দিয়েছে। আমি তাদেরকে মেয়েটির চিকিৎসার জন্য বললে তারা মেয়েটিকে আবার বাসে উঠিয়ে পিরিজপুরের দিকে নিয়ে যায়। ডিআইজিসহ পুলিশের কর্মকর্তাগণ পিরিজপুর বাজারের হাবিবুর রহমানের সততা ফার্মেসী ওষুধের দোকান পরিদর্শন করেন। হাবিবুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, রাতে স্বর্ণলতা বাসের চালকসহ তিনজন ব্যক্তি অসুস্থ একটি মেয়েকে আমার দোকানে নিয়ে আসে। তার অবস্থা আশংকাজনক দেখে আমি তাদেরকে পার্শ্ববর্তী ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেই। বাসের চালক ও তার সহকারীরা অটোরিকশা খোঁজাখুজি করলেও কোন ড্রাইভার মেয়েটিকে চিলতে না পারায় তারা হাসপাতালে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। অগত্যা তারা মেয়েটিকে পুনরায় তাদের বাসে তুলে কটিয়াদীরের দিকে চলে যায়। হাবিবুর রহমান আরও জানান, মেয়েটি কোন কথা বলতে পারছিল না। বাজারের কেউ তাকে চিনতেও পারছিল না। আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করছি। ওই ঘটনায় কোন নিরিহ মানুষকে যেন হয়রানী না করা হয় বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখার অনুরোধ জানান। মামলার বাদী গিয়াস উদ্দিন ডিআইজিকে বলেন, আমার মেয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের আমি ফাঁসি চাই। পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, বাস চালক নুরুজ্জামান নুরু ১৬৪ ধারায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। কিশোরগঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুর ইসলাম বলেন, ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপার পৃথক পৃথক ভাবে মামলার বাদী ও আটককৃত আসামীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে কর্মকর্তাগণ কিশোরগঞ্জ চলে যান।
উল্লেখ্য গত ৬মে সোমবার স্বর্ণলতা বাসে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাজিতপুর উপজেলার ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহা সড়কের বিলপাড় গজারিয়া নামকস্থানে নার্স শাহিনুর আক্তার তানিয়াকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে। এ ব্যাপারে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পুলিশ পাঁচজনকে আটক করে।