টানা পাঁচদিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র পেলেও দুই সন্তান নিয়ে বাসায় ফিরতে পারেনি বিধবা বাসন্তী রানী (২৮)। দেবর সমীর হাওলাদারের ভয়ে রোববার রাতে নিজগৃহে না গিয়ে কুয়াকাটায় বাবার বাসার আশ্রয় নিয়েছে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নিজকাটা গ্রামে স্বামীর সম্পত্তি দখলের জন্য গত ৮ মে বিকালে ঘর থেকে বেড় করে দেবর সমির প্রকাশ্যে রডদিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাঁটিয়ে দেয়। দুই মেয়ের স্বামী শ্লীলতাহানি করে। রক্তাক্ত মাকে বাঁচাতে দশম শ্রেণিতে পড়-য়া মেয়ে স্বর্ণা ও পঞ্চম শ্রেণিতে পড়-যা মেয়ে সমাপ্তিসহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তাদের বেধড়ক মারধর করে। ঘটনার রাতেই তাঁদের কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বাসন্তী রানী জানান, হাসপাতাল থেকে তাদের ছেড়ে দেয়া হলেও ভয়তে বাসায় যেতে পারছেন না। তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানালেও তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
এমনকি এ ঘটনায় কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ৯ মে মামলা দায়ের করেছেন সমীর হাওলাদার ও পুতুল রানীর নামে। আদালতে কলাপাড়া থানার ওসিকে মামলা এজাহার হিসেবে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সমীর ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রকাশ্যে।
বাসন্তী রানী বলেন, স্বামী মারা গেছে প্রায় ১২ বছর। দুই মেয়েকে লেখাপড়া ও দুমুঠো মুখ ভাত তুলে দিতে তাকে রাস্তার মাটিকাটা, হোগলা বোনাসহ বিভিন্ন কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু স্বামীর স্বামীর শেষ সম্বলটুকু দখলে নিতে এখন তাদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে দেবর সমীর। সমীরের মারধর থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা তার কিশোরী দুই মেয়ে। হামলার ভয়ে তাদের স্কুলে যাওয়া ও লেখাপড়া এখন বন্ধের পথে।
বাসন্তী রানীর বড় মেয়ে স্বর্ণা জানায়, মাকে রড দিয়ে যেভাবে মেরেছে তা সহ্য করতে না পেরে মাথার রক্ত থামাতে গায়ের ওড়না দিয়ে মায়ের মাথা বেঁধে দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাকা তাকেও মারধর করে। এতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। মা আমাদের জন্য যে কষ্ট করছে এখন এই ঘর দখল করে নিলে আমরা কোথায় থাকব, কে দিবে আমাদের আশ্রয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হালিম জানান, তিঁনি ঘটনা শুনেছেন। আজ বিকালে বাসন্তী রানী যাতে ঘরে ফিরতে পারে সে ব্যাপারে তিনি সহযোগীতা করবেন। এ পরিবারটি খুবই অসহায়।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান,এজাহার কপি এখনও হাতে পাইনি। তবে বিষয়টি তিঁনি দেখবেন বলে জানান।