পারিশ্রমিক ছাড়া কাজ করতে অনিহা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে অনিয়মিত কর্মচারীর বিরুদ্ধে কখনও ২০ লাখ, কখনও ২৫ লাখ আবার কখনও ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। একপর্যায়ে থানা পুলিশের হয়রানীর মুখে গত ১৫দিন পর্যন্ত নিজ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ওই কর্মচারী। একজন সামান্য অনিয়মিত টেকনিশিয়ান সরকারী এ বিপুল পরিমান অর্থ কিভাবে আত্মসাৎ করেছে তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি জেলার মুলাদী উপজেলার।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের রোষানলে পুলিশ দিয়ে ওই টেকনিশিয়ানকে গ্রেফতারের ভয়দেখিয়ে এক রাত আটক করে রাখার পর পূর্ণরায় হয়রানী করায় গত ১৫দিন থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অনিয়মিত কর্মচারী বেলাল হোসেন। ফলে তার (বেলাল) পরিবারকে সরকারী পিয়ন ও নাইটগার্ডদের মাধ্যমে বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অসহায় বেলাল হোসেন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের মাধ্যমে নায্য বিচার পেতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে বেড়ানো তথ্য ও যোগাযোগ অধিদপ্তরের ইনফো সরকার-২ প্রকল্পে মুলাদী উপজেলা টেকনিশিয়ান (অনিয়মিত কর্মচারী) বেলাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গত ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যা রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন ফোন করে আমাকে তার অফিসে ডাকেন। আমি এশার নামাজের আগেই অফিসে ঢুকে দেখতে পাই ইউএনও, থানার ওসিসহ একদল পুলিশ অফিসে বসে আছেন। আমি অফিসে প্রবেশের সাথে সাথে ইউএনও স্যার আমাকে বলেন, আপনি অফিসের প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। কিছুক্ষণ পর উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে জানায় আমি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছি। পরবর্তীতে আমার স্ত্রীর কাছে ইউএনও জানায় আমি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছি।
বেলাল আরও জানান, মুলাদী থানার ওসি জিয়াউল আহসান আমাকে একটি কক্ষে আটকে রেখে হুমকি দিয়ে বলেছেন আমি ইউএনও’র চাহিদা অনুযায়ী টাকা জমা না দিলে আমাকে একাধিক পেন্ডিং মামলায় গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করবে। ওইসব মামলায় আমাকে জীবনের শেষসময় পর্যন্ত কারাগারে কাটাতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জনপ্রতিনিধিরা বলেন, ইউএনও’র অভিযুক্ত বেলাল হোসেন একজন সামান্য অনিয়মিত টেকনিশিয়ান। তার কাছে সরকারী এত বিপুল পরিমান অর্থ থাকার কথা নয়, সেখানে সে (বেলাল) কিভাবে অর্থ আত্মসাৎ করেছে বিষয়টি রহস্যজনক।
এ ব্যাপারে মুলাদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে তদন্ত চলছে তাই এখনও সঠিক করে মোট টাকার পরিমান বলা যাচ্ছেনা। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়গুলো পরবর্তীতে গণমাধ্যমকে জানানোর কথা বলে তিনি এ ব্যাপারে আর কোন কথা বলতে রাজি হননি।