ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়নের সালেপুর আমিনখার হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মৌলভী শিক্ষক মোঃ মোতালেব হোসেনের বি.এড সনদ ভুয়া প্রমানিত হওয়ায় গত মঙ্গলবার তার এমপিও বাতিলের জন্য সুপারিশ করেছেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি। এরআগে ‘রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’ কর্তৃক উক্ত মৌলভী শিক্ষকের সনদপত্র খানা যাচাই করা হয়। সনদপত্রটি যাচাইয়ের পর ভুয়া প্রমানিত হয়। এতে করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন ঢাকা অঞ্চলের উপপরিচালক গৌরচন্দ্র মন্ডল ওই দুর্নীতিগ্রস্থ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশনা দিয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির প্রতি পত্র ইস্যু করেন। বিদ্যালয় কার্যকরি কমিটি সে প্রেক্ষিতে দ্রুত সভা করে দুর্নীতিগ্রস্থ শিক্ষকের এমপিও বাতিলের জন্য সুপারিশমালা উর্দ্ধতন দপ্তরে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছে। এছাড়া উক্ত শিক্ষকরে নিয়োগপত্র সহ যোগদানপত্র খানাও পিছনের তারিখ উল্লেখ করে (বেক ডেটে) তৈরী করা হয়েছে বলেও বিদ্যালয় কার্যকরি কমিটির সভার রেজুলেশনে উল্লেখ রয়েছে।
ভুয়া সনদের ব্যাপারে বৃহস্পতিবার উক্ত মৌলভী শিক্ষক মোঃ মোতালেব হোসেনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “বি.এড ক্লাশে ভর্তি হয়েছিলাম ঠিকই, কিন্ত কেমনে জানি সার্টিফিকেটটি জাল এসেছে। আর মৌলভী শিক্ষককে বিএড সার্টিফিকেট লাগেনা বলেও তিনি জানান”।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির ১৫/১৯ .৭৮ নং সভার ৬ নং সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মোঃ মোতালেব হোসেেনর ই.ঊফ -২০০৮ সনদপত্রখানা রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা কর্তৃক যাচাইয়ান্তে ভুয়া প্রমানিত হয়। এছাড়া ২০০৮ সালের ১২ জুন তারিখে উক্ত শিক্ষককে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি নিয়োগ পত্র দিয়েছেন। কিন্ত তার সমস্ত কাগজপত্রে ২০০৫ সালের ২৬ জানুয়ারী তারিখ উল্লেখ পূর্বক জাল জুয়াচুরির মাধ্যমে তৈরী করা হয়েছে। পরে ওইসব ভুয়া কাগজপত্রাদি ঢাকা ডিজি অফিসে এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করে সে ইনডেক্সধারী শিক্ষকও হয়েছেন। তার শিক্ষক ইনড্রেক্স নং- ১১৪২২২৪। কিন্ত সম্প্রতি শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয় থেকে কাগজপত্রাদি যাচাইয়ের পর নির্দেশনা আসার পর বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি ওই মৌলভী শিক্ষকের এমপিও বাতিলের জন্য সুপারিশ করেন।
এ ব্যাপারে সালেপুর আমিনখার হাট উচ্চ বিদ্যালয় কার্যকরি কমিটির সভাপতি ওবায়দুল বারী দীপু বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, “ মাত্র কয়েক বছর আগে ওই মৌলভী শিক্ষক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। সে সময়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করে জাল কাগজপত্র দাখিল পূর্বক উক্ত মৌলভী শিক্ষক এমপিওভুক্তি সরকারি অর্থ আতœসাত করেছেন। কিন্ত বর্তমান সরকার অফিসিয়াল কাগজপত্রাদি অনলাইন ভিক্তিক করার ফলে ওই মৌলভী শিক্ষকের জাল জুয়াচুরি আমাদের কাছে ধরা পড়েছে। উক্ত শিক্ষকের সমস্ত দুর্নীতির নথিপত্র উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস চাপা দিয়ে রেখেছেন বলেও বিদ্যালয় ম্যানেজিয় কমিটির বর্তমান সভাপতি আক্ষেপ করেন”। একই দিন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, “ উক্ত মৌলভী শিক্ষকের কোনো কাগজপত্র আমার অফিসে সংরক্ষিত নাই। আমার পূর্ববতি অফিসার আবুল খায়ের উক্ত শিক্ষকের কাগজপত্র কি করে গেছেন তা আমি বলতে পারবো না”। আর বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আঃ রাজ্জাক মিয়া বলেন, “ জাল কাগজপত্র প্রমান হওয়ার পর প্রায় সাত মাস ধরে উক্ত মৌলভী শিক্ষকের বেতন/ভাতাদি বন্ধ রাখা হয়েছে এবং তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদগুলো বিদ্যালয়ে দাখিল করার নোটিশ দেওয়ার পরও অদ্যবধি সে শিক্ষা সনদ পেশ করেন নাই”।