আসন্ন ঈদ-উল ফিতরের বিশেষ সার্ভিসে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে যাত্রী পরিবহনে যুক্ত হবে ২৩টি বেসরকারী বিলাসবহুল যাত্রীবাহি লঞ্চ। পাশাপাশি গ্রিনলাইন ওয়াটার ওয়েজ কোম্পানির দুটি ও অ্যাভেঞ্চার কোম্পানির একটি জাহাজ দিবা সার্ভিসে যাত্রী পরিবহন করবে।
এছাড়া বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) পাঁচটি জাহাজ যাত্রীসেবায় নিয়োজিত থাকবে। তবে যাত্রীদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে লঞ্চের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দরা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি লঞ্চ কোম্পানি ঈদ সার্ভিসের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। বিশেষ করে এমভি কীর্তনখোলা, এমভি মানামী, এমভি টিপু ও গ্রিনলাইন নগদ ভিত্তিতে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে। গত ১১ মে থেকে সরাসরি যাত্রীদের কাছে স্পেশাল সার্ভিসের টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করে অ্যাডভেঞ্চার লঞ্চ কোম্পানি। এছাড়া ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের তিনটি লঞ্চে বিশেষ সার্ভিসের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ অগ্রিম টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে গত ১২ মে থেকে আবেদন নেওয়া শুরু করেছে। এ আবেদন গ্রহণের কার্যক্রম চলবে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই শেষে নির্দিষ্ট বিশেষ সার্ভিসের কেবিন ও সোফার টিকিট যাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
মের্সাস সালমা শিপিং কর্পোরেশেনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস বলেন, এবারের ঈদে নারীর টানে বাড়িতে ফেরা যাত্রীদের যেন কোন ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সে বিষয়টি খেয়াল রেখে আগেভাগেই টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। তাছাড়া বিশেষ সার্ভিসেও বিগত বছরগুলোর তুলনায় নৌযান বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে এবার ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে যাত্রী ভোগান্তি থাকছে না।
সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির মালিক ও কেন্দ্রীয় লঞ্চ মলিক সমিতির সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, ঈদ-উল ফিতরের বিশেষ সার্ভিসে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে ২৩টি লঞ্চ প্রাথমিকভাবে যাত্রীসেবায় নামানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি লঞ্চ দিনে দুটি করে ট্রিপ দেবে। এরপরে যাত্রী চাহিদা থাকলে লঞ্চের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া আগামী ১৮ মে ঢাকায় মালিক সমিতির একটি বৈঠক রয়েছে। সেখানেও বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস শুরু নিয়ে আরও নতুন কোন সিদ্ধান্ত হতে পারে। এর আগে গত সপ্তাহে ঈদ সার্ভিস উপলক্ষে ঢাকায় আন্তঃমন্ত্রণালয় একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে নিরবিচ্ছিন্ন যাত্রীসেবা দেওয়ার বিষয়ে সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে মালিক পক্ষের আলোচনা হয়েছে। ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে নৌপথের যাত্রীদের নিরাপদে যাতায়াতের জন্য লঞ্চ টার্মিনালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা এবং নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণসহ ১০ দফা সুপারিশ করেছে নৌ-রক্ষা জাতীয় কমিটি।
অপরদিকে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে ঈদ-উল ফিতরের বিশেষ সার্ভিস দিতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও প্রস্তুতির বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি’র বরিশাল অফিসের সহকারি মহা-ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের এমভি মধুমতি, এমভি বাঙালী, পিএস চাঁন, পিএস মাসুদ ও পিএস লেপচা নামের পাঁচটি জাহাজ যাত্রীসেবায় নিয়োজিত থাকবে।