বিরলে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধুতে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ গৃহবধূর লাশ হাসপাতাল থেকে উদ্ধার ও ঘাতক স্বামীকে আটক করেছে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভান্ডারা ইউপি’র পাকুড়া ( খালপাড়া ) গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিন এর পুত্র মোস্তফা কামাল এর সাথে পারিবারিকভাবে একই ইউপি’র বালান্দোর গ্রামের রফিজ উদ্দীনের কন্যা নারগিছ বেগম এর বিবাহ হয়।
দাম্পত্য জীবনে তাঁদের ২ কন্যা ও ১ পুত্রের জন্ম হয়। এরইমধ্যে প্রায় ৮ বছর যাবৎ চট্টগ্রামে ইপিজেড এ চাকুরীর সুবাদে মোস্তফা কামাল নারগিছকে পিত্রালয় থেকে যৌতুক বাবদ নগদ টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে ২য় বিয়ে করে চট্টগ্রামে বসবাস শুরু করে মোস্তফা। ১৬ মে সকাল ১০ টায় আড়াই বছর বয়সী পুত্র নিহান বাড়ীর পার্শ্ববর্তী খালের পানিতে পড়ে মারা গেলে বিকাল ৬ টায় মোস্তফা কামাল বাড়ীতে আসে। পুত্র শোকে নারগিছ আক্তার আহাজারী করতে থাকে।
একদিকে সন্তান হারানোর বেদনা, অপরদিকে স্বামীর পূণরায় যৌতুকের চাপে হঠাৎ নারগিছ গুরুতর অসূস্থ্য হয়ে পড়লে শশুড় বাড়ীর লোকজন শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে নারগিছকে। এরপর হাসপাতালে বেশ কয়েক বার রক্তবমি করে রাত ৭ টায় নারগিছ বেগম মারা গেলে পিত্রালয়ের লোকজন থানা পুলিশে সংবাদ দেয়।
বিরল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ সংবাদ পেয়ে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে মোস্তফা কামালকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে এবং রাতেই লাশে উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে।
শনিবার সকালে নারগিছ এর লাশ দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়। ময়না তদন্ত শেষে থানার এস আই মানিকুল ইসলাম নিহতর লাশ তাঁর ভাই বেলাল হোসেন এর নিকট হস্তান্তর করে। যৌতুকের দাবীতে ও ২য় বিবাহে বাঁধা দেয়ায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগে নিহতর ভাই বেলাল হোসেন বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেছে।
থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ এ টি এম গোলাম রসুল জানান, মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। আটককৃতকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
নিহতর ভাই বেলাল হোসেন জানান, থানায় এজাহার দাখিল করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পেয়েছি বিকাল ৫ টায় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।