যে নদী ছিল একসময় পূর্ণ যৌবনা, যার বুক চিরে চলার পথে নাবিকের বুক দুরু দুরু করে কাঁপত, সেই নদী এখন ছোটদের খেলার মাঠ, পশুর চারণভূমি আর কৃষকের ধানচাষের খেতে পরিণত হয়েছে। খননের অভাবে বছর বছর পলি পড়ে আর প্রকৃতিগত নানা কারণে হিসনা নদী আজ মৃতপ্রায়। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা শহরের কাঠেরপুল এলাকায় ভূমিদস্যুাদের দখলের কারণে হিসনা নদী আজ মরে গেছে। হিসনা নদী দখলদারদের দৌরাত্ম্যে আজ মৃত। কাঠেরপুল এলাকায় হিসনা নদীর ধারে গড়ে উঠেছে বড় বড় বিল্ডিং, মসজিদ, স-মিলসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
হিসনা নদীটির বিভিন্ন অংশের দখল নিয়ে মালিকানা দাবি করে আসছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত উন্মুক্ত নদী হলেও প্রভাবশালী এসব ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা দিয়ে সুফল নিতে হচ্ছে সাধারণ চাষিদের। এ ছাড়া মাছের প্রাচুর্যের জন্য খ্যাত এ নদীতে দখলদাররা বাঁধ দিয়ে পুকুর কেটে মাছ চাষ করছে। ফলে সাধারণ মানুষ মাছ ও সেচ দেওয়ার মতো কোনো সুবিধাই পান না এখান থেকে।
কিন্তু এই নদীটি দখলদারির কালো থাবা আর পুনঃখনন না হওয়ায় নাব্যতা হারিয়ে সবুজ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে পুরো হিসনা নদী বুক ফসলের চাষাবাদ, ফুটবল খেলা আর গোচারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। হিসনা নদী বুক দখল করে গড়ে উঠছে বড় বড় বিল্ডিং, মসজিদ, স-মিলসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
দখলের কারণে বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য কোনো সময় হিসনা নদীতে মোটেই পানি থাকে না। তবে অনেক বছর আগে ভূমি অফিসের কিছু দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তির মাধ্যমে ভুয়া লিজের কাগজ তৈরি করার অভিযোগ আছে।
প্রবীণ ব্যবসায়ী সামছুল বলেন, নদী মরে যাওয়ার কারণে জলপথের সব যোগাযোগ বন্ধ। এই কাঠেরপুলে হিসনা নদীতে বড় বড় স্টীমারসহ বড় বড় নৌকা ভীড়তো। এককালে ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে ওঠে । এখন যোগাযোগ নেই বললেই চলে। জেলার নদীগুলো সংস্কার করা হলে অর্থনীতির চাকা ফের চালু হবে।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল মারুফ বলেন, হিসনা নদী দখল ও খননের বিষয়টি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে নদী রক্ষা কমিশনকে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুতই কাজ শুরু হবে।