কিশোরগঞ্জে নার্স তানিয়াকে গণধর্ষণশেষে হত্যার পর এবার দুই কিশোরী ধর্ষিত হয়েছে। জানা গেছে, পাকুন্দিয়ার পল্লীতে ১১ বছরের এক কিশোরী ধর্ষিত হয়েছে। রোববার রাতে তারাবির নামাযের সময় ঐ কিশোরী পার্শ্ববর্তী বাড়ীর দুই ধর্ষক তাকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ধর্ষক ও তার পরিবার উঠে পড়ে লাগে। পাকুন্দিয়া থানার ষাইটকাটহন পূর্বপাড়া গ্রামের রেনু মিয়ার পুত্র কাউসার ও সেলিম মিয়ার পুত্র ফেরদৌস তারাবির নামাযের সময় খোকন মিয়া কন্যা রতœা কে ডেকে নেয়। পরে তারা জোর পূর্বক মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় মেয়ের মা পাকুন্দিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষকদ্বয়কে আটক করে। মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করলে ম্যাজিস্ট্রেট তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এদিকে ঘটনার শিকার রতœাকে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ২২ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ডের জন্য চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন জানান। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনার শিকার রতœা জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করার জন্য সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওবায়দা খানমের নিকট প্রেরণ করেন। তিনি ঘটনার শিকার রতœার জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করেন ও ঘটনার শিকার রতœা স্ববিস্তারে ঘটনার বর্ণনা দেন। তাছাড়া তাকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তার পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে ডাক্তার বিলকিছ ফারহানা তার মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এতে ধর্ষণের সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া গেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাকুন্দিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, মামলা দায়েরের পরপরই অভিযান চালিয়ে আসামীদেরকে আটক করা হয়েছে। তাছাড়াও দ্রুততার সাথে ঘটনার শিকার রতœার ডাক্তারী পরীক্ষাসহ জবানবন্দী গ্রহণ করতে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে সবিস্তারে আর কিছুই উল্লেখ করেননি।
অন্যদিকে কটিয়াদীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরী (১৫) কে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে কটিয়াদী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ লোহাজুরী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল রশিদকে আটক করে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার রাত ৮টায় সুমন নামের এক যুবক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোটর সাইকেলে করে পার্শ্ববর্তী পাকুন্দিয়া উপজেলায় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যায়। ঐ বাড়িতে তার দুই বন্ধু ছাড়া অন্য কেউ ছিল না। সেখানে কিশোরীকে সুমন প্রথমে ধর্ষণ করে। পরে তার দুই বন্ধু শুভন ও শামীমসহ কিশোরীকে ৬ দিন ঘরে আটকে রেখে পালাক্রমে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষককারী সুমন লোহাজুরী ইউনিয়নের দশপাখী গ্রামের চান্দু মিয়ার ছেলে, শুভনের বাড়ি দশপাখী গ্রামে এবং শামীম পাকুন্দিয়া উপজেলা পূর্ব চরপাড়াতলা গ্রামের বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে কটিয়াদী মডেল থানার ওসি ( তদন্ত ) শফিকুল ইসলাম বলেন, কিশোরীকে ডাক্তার পরীক্ষার জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এবং আটক মেম্বারকে কিশোরগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর নার্স তানিয়াকে চলন্ত বাসে ধর্ষণশেষে হত্যার পর এবার পবিত্র মাহে রমজানে আরও দু কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুশীল সমাজ।