পুলিশের উপর হামলা, ব্যাংক জালিয়াতি, চাঁদাবাজি, লুটসহ একাধিক মামলার আসামি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাচ্চু বেপারী ওরফে ভাঙ্গারী বাচ্চুর বেপরোয়া কর্মকা-ে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে এলাকার সাধারণ জনগন।
স্থানীয়রা জানান ২০০০ সালে শিকারপুর বন্দর সংলগ্ন মাছ বাজারে পলিথিন বিক্রি শুরু করে। এরপর ২০০৩ সালে দোয়ারিকা ও শিকারপুর সেতু উদ্বোধন হলে শিকারপুর বন্দরের ফেরী চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ভাঙ্গারির ব্যবসা শুরু করে বাচ্চু। সেই থেকেই স্থানীয়ভাবে পরিচিতি পান ‘ভাঙ্গারি বাচ্চু’ হিসেবে। তৎকালীন সময়ে বাচ্চু তার ভাঙ্গারী দোকানের আড়ালে ফেন্সিডিলের ব্যবসা শুরু করেন। শিকারপুর এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ীরা জানান, বাচ্চু এলাকার বিভিন্নস্থানে ছিঁচকে চুরি করে কয়েক বার ধরা পড়ে গণপিটুনি খায়। তাছাড়া ফেরীঘাট থাকাকালীন সময়ে সে শিকারপুরে একটি চোরচক্র নিয়ন্ত্রন করতো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিকারপুর এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীরা জানান, মাধ্যমিকের গন্ডি না পেরিয়েই বাচ্চু নিজেকে সাংবাদিক দাবী করে এলাকায় একের পর এক অপকর্ম আর সন্ত্রাসী কর্মকা- শুরু করে। এছাড়াও একাধিকবার চাঁদাবাজি ও নারীর সাথে অবৈধ মেলামেশা করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরাপরে কয়েক বার গণপিটুনির শিকারও হয় বাচ্চু।
গত ১০ মে রাতে উপজেলার শিকারপুর বাজারস্থ শম্পা ষ্টুডিও দোকান ঘরের মধ্যে বসে থাকা এক কলেজ ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ঘটায় বাচ্চু। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী বাদী হয়ে বাচ্চুসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে গত ১১ মে উজিরপুর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, বাচ্চু নিজেকে সাংবাদিক তথা আইনের লোক দাবী করে ওই কলেজ ছাত্রীর পড়নের ওড়না নিয়ে যায় এবং তার শরীরের কাপড় টানা হেচড়া করে। এতে সে (ছাত্রী) প্রতিবাদ করলে কলেজ ছাত্রীকে ষ্টুডিওর পিছনে নিয়ে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় বাচ্চু। এমনকি নগ্ন অবস্থায় বাচ্চু তার মোবাইল ফোন দিয়ে ওই ছাত্রীর বেশ কিছু অশ্লীল ছবি তোলে। সর্বশেষ গত কয়েকদিন আগে শিকারপুর বন্দরের আউয়াল নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে অর্ধলক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে বাচ্চু। ওই ব্যবসায়ী বাচ্চুকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় শিকারপুর বন্দরের পুলিশ ফাঁড়ির সামনে বসে ওই ব্যবসায়ীর উপর হামলা চালায় বাচ্চু। এ ঘটনায় উজিরপুর মডেল থানায় বাচ্চুর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
উজিরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাকিল মাহামুদ আউয়াল খান জানান, মাধ্যমিকের গন্ডি না পেরিয়ে বাচ্চু বেপারী কিভাবে সাংবাদিক হলো তা তাদের জানা নেই। তিনি আরও জানান, বাচ্চুর একাধিক বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে উজিরপুরের পেশাদার সাংবাদিকদের নিয়ে বিরুপ প্রক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।