নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি প্রকল্পের গাছ বিক্রির পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও হতদরিদ্র উপকারভোগী সদস্যগণ তাদের লভ্যাংশের টাকা না পাওয়ার হতাশায় ভুগছেন। পবিত্র ঈদ-উল ফিতরের আগে টাকা পাবার আশায় সদস্যগণ সমিতির সভাপতির নিকট ধর্ণ্যা দিচ্ছেন। সদস্যদের লভ্যাংশের টাকা বিতরণে বন বিভাগের টালবাহানা উপকারভোগীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে জানা যায়, সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় ২০০৫ সালে এস সেভেনটি ক্যানেলের দুই বাঁধে উপকারভোগী সদস্যগণ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগান। তিস্তা ব্যারাজ প্রধান ক্যানেল হতে এস সেভেনটি ক্যানেলের তমালতলা চন্ডীর বাজার পর্যন্ত দুই বাঁধে সৃষ্টি হয় সামাজিক বনায়ন। ক্যানেল সংলগ্ন এলাকার ভূমিহীন, হতদরিদ্র ও বিধবা ১শ’ ৫০জন মহিলা বনায়ন কর্মসূচির উপকারভোগী সদস্য নির্বাচিত হন। সমিতির সদস্যগণ বাগান নির্মাণ, রক্ষাণাবেক্ষণ ও দীর্ঘদিন ধরে দেখভাল করেছেন। জানুয়ারী মাসে টেন্ডারের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকায় ওই প্রকল্পের গাছগুলো বিক্রি করেন বন বিভাগ। চুক্তি মোতবেক বিক্রয় মূল্যের শতকরা ৫৫ ভাগ টাকা উপকারভোগী সদস্যগন পাবেন। অথচ গাছ বিক্রির দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বন বিভাগ ওই প্রকল্পের উপকারভাগী সদস্যদেরকে লভ্যাংশের টাকা দিচ্ছেন না। ছবি, ভোটার আইডি কার্ড ও আবেদনপত্র নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জামা করলেও উপকারভোগীদের পাওনা টাকা দেয়ার কোন সাড়া নেই। বন বিভাগের উদাসীনতায় হতদরিদ্র উপকারভোগী সদস্যগণ তাদের লভ্যাংশের টাকা না পাওয়ার হতাশায় ভুগছেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে বনায়ন কর্মসুচির লভ্যাংশের টাকার জন্য অনেকে সমিতির সভাপতি নিকট ধর্ণ্যা দিচ্ছেন।
ওই ক্যানেলের বাঁধ সংলগ্ন বাজেডুমরিয়া গ্রামের পশ্চিম পাড়ার টুলটুলি বেগম, কমলা বেগম ও সালেহা বেগম জানান, গাছ বিক্রির লভ্যাংশের টাকা এই মাসে দিবে, ওই মাসে দিবে, কিন্তু কবে দিবে সঠিক কোন খবর নেই। আদৌ টাকা পাব কি না, বন বিভাগের লোকজন তাও জানায় না। আমরা গরীব মানুষ ঈদের আগে ওই টাকা পেলে অনেক উপকার হত। বড়ডুমরিয়া গ্রামের মাষ্টার পাড়ার হনুফা বেগম ও হিন্দুপাড়ার মালতি রানী জানান, গাছ বিক্রির লাভের টাকা পাবার আশায় খরচের জন্যও টাকা দিয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশের টাকার জন্য সমিতির সভাপতি নিকট ধর্ণ্যা দিয়েছি। শুধু বলে সবাই টাকা পাবে। আর কত মাস পরে টাকা দিবে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নাজমুল হাসান জানান, সদস্যদের কাগজপত্র প্রক্রিয়ার সমস্যা হেতু টাকা বিতরণে বিলম্ব হচ্ছে। ১শ’ ৫০জন সদস্যর কাগজপত্র প্রক্রিয়া করতে আর কতদিন লাগবে। এর কোন সদুত্তোর মেলেনি।
এব্যাপারে রংপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান এর সঙ্গে মুঠোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি ঢাকা যাচ্ছি, এসে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেব, যাতে ঈদের আগে সদস্যরা তাদের লভ্যাংশের টাকা পান।