এবার গ্রামে গিয়ে কৃষকদের কাছ হতে সরাসরি ধান ক্রয় করলেন গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শিমুল আকতার। বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের পিরিজপুর গ্রামে গিয়ে সরকারী নির্ধারিত মূল্য ২৬ টাকা কেজি দরে ধান ক্রয় করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শিমুল আকতার বলেন সারাদেশে কৃষক ধানের মূল্য নিয়ে হতাশায় আছে। খাদ্য গুদামে কৃষকরা সরাসরি ধান বিক্রয় করতে পারছে না এমন খবরের ভিত্তিতে ধান কেনাবেচার যে কোন মূল্যে কৃষকদের সরাসরি সম্পৃক্ত করতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শিমুল আকতার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিকাশ চন্দ্রকে নিয়ে উপজেলার পিরিজপুর গ্রামে যান। সেখানে তিনি রবিউল ইসলাম, আকতার, ওসমান, সাদিকুল ও মোজাম্মেল হক প্রত্যেকের কাছ হতে ১ মেট্রিক টন (২৫ মন) ধান ২৬ টাকা (১০৪০) কেজি দরে ক্রয় করেন।
কৃষক রবিউল বলেন, আমি ১৫ বিঘা জমি আবাদ করেছি বিঘাপ্রতি ফলন ১৮-২০ মন। ধানের দাম বারবার কম পাওয়াতে আমাদের প্রচুর লোকসানের মুখে পড়তে হয়। সরকার আমাদের কাছে সরাসরি এসে ধান ২৬ টাকা কেজি দরে ক্রয় করলো তাতে আমরা খুবই খুশি। এমন ভাবে ধান ক্রয়ের উদ্যোগ সরকার বজায় রাখলে কৃষকরা লাভের মুখ দেখবে বলে জানান।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এদেশের কৃষক কষ্ট করে ধান-গম ফলিয়ে থাকে। এবার কৃষকদের আরো দূরঅবস্থা এমন চলতে থাকলে কৃষকরা ধান ফলাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে ফলে খাদ্য উৎপাদনে আমাদের অসুবিধা হবে। কৃষকদের কল্যাণে যা যা করা দরকার তা করবো। খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে কৃষকরা যাতে সরাসরি ধান গুদামে দিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে। কেউ যদি কোন হস্তক্ষেপ করে তাহলে কোন ছাড় নাই। তিনি কোন বাঁধা বিঘœকে উপেক্ষা করে কৃষকদের কে সরাসরি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রয় করার আহ্বান জানান। প্রয়োজনে তিনি কৃষকদের সরাসরি সাহায্য সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বলেন, কার্ডধারী কৃষক যাতে স্বতঃফুত ভাবে ধান সরকারি মূল্যে বিত্রয় করতে পারে তার জন্য মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সরকার প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা মূল্যে একজন সর্বনিন্ম ১২০ কেজি (৩ মন) ও সর্বোচ্চ ১০০০ কেজি ( ২৫) মন ধান খাদ্য গুদামে বিক্রয় করতে পারবে।
এদিকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার ২ টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে কার্ডধারী কৃষক থাকলেও গোদাগাড়ী ইউনিয়ন, পাকড়ী ও মোহনপুর ইউনিয়নের ১০২৩ জন কৃষকের নাম কৃষি অফিস হতে পাঠানো তালিকায় পাওয়া গেছে। বাকি ইউনিয়ন ও পৌরসভার কৃষকদের তালিকা কই জানতে চাইলে খাদ্য কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র জানান, গত ১০-৪-২০১৯ ইং তারিখে আমার অফিস হতে ধান উৎপাদনকারী কৃষকদের তালিকা চেয়ে চিঠি পাঠালে ১০২৩ জনের তালিকা পাই। বাকি কার্ডধারী কৃষকের তালিাক খাদ্য গুদামে না গেলে কৃষক ধান বিক্রয় করতে পারবে না ? এমন প্রশ্ন করতে তিনি কৃষি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলামে সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন ২৭ হাজার কৃষকের তালিকা দেওয়া সম্ভব না। আমার অফিসে লোকজন কম তাই টাইপিং করে দিতে সময় লাগবে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলার তালিকাধারী কৃষক ধান বিক্রয় করতে গেলে তালিকা নিয়ে যে সমস্যা তা নিরসনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করে ঠিক করে নিবো বলে জানান।