দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে বুধবার ভোর রাতে অর্থাৎ দিন তারিখের দিক দিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে প্রচন্ড ঝড় ও বিদ্যুতের ঝোলকানিতে বৃষ্টি শুরু হয়, ঝড়ের প্রচন্ড আওয়াজে ভীত সন্ত্রত হয়ে পড়ে মানুষ। প্রচন্ড ঝড়ে, বনজ, ফলদ সহ বিভিন্ন প্রকার গাছ দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে পড়ে রাস্তার ওপর, ধান ক্ষেত্রের ওপর, বাড়ীর প্রাচীরের উপর। আম ও লিচু গাছের প্রায় অর্ধেক ঝরে গেছে উপজেলার কয়েকটি জায়গায়। পাকা ধান জমিতে শুয়ে পড়েছে সব মিলিয়ে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে দিনজপুরের কাহারোলে। অপর দিকে আম লিচু চাষিরা পড়েছেন বিপাকে। হঠাৎ ঝড় এসে অর্ধেকের বেশী ফল ঝরে যায়, ঝড়ের পূর্বে প্রচন্ড তাপদাহে লিচু ঝরে পড়েছে সব মিলিয়ে মুখে হাসি নেই আম ও লিচু চাষিদের।
দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার লিচু রাজ্য হিসাবে খ্যাত এ উপজেলার লিচু রং, স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয় এবং দেশ বিদেশে সমাদৃত। এ লিচু বাগান করে অর্জিত অর্থ দ্বারা অনেকে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। প্রথমে উপজেলার নয়বাদগ্রাম সহ দুই একটি গ্রামে লিচুর আবাদ শুরু হলেও এখন বিস্তৃত হয়ে তা গোটা জেলায় লিচুর রাজ্য হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে।
এখানকার লিচুর জাতের মধ্যে, চায়না-টু, চায়না-থ্রী, বেদেনা, কাঁঠালি, বম্বাই ও মাদ্রাজি উল্লেখ যোগ্য। এসব লিচুর মধ্যে মাদ্রাজী জাতের লিচু ইতোমধ্যে বাজারে ক্রেতাদের মন কেড়েছে। বাকী সব জাতের লিচু ঈদের আগে এবং ঈদের ১০ দিন পর এর মধ্যেই বাজারে উঠবে। প্রথম থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে বাগান মালিক ও লিচু চাষিরা আনন্দে থাকলেও শেষ দিকে এসে দারুণ শঙ্কায় পড়েছে। টানা কয়েক দিনের প্রখর রোদ্র ও দারুণ তাপদাহে গাছ থেকে লিচু ফেঁটে চৌচির হয়ে অসংখ্য লিচু মাটিতে ছুটে পড়ছে। এতেকরে প্রতিনিয়ত ক্ষতির দিকে ধাপিত হচ্ছে বাগান মালিক ও লিচু চাষীরা।
কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মোঃ সাদেক বলেন, বর্তমানে প্রচন্ড রোদের কারণে তাপমাত্রা দারুণ ভাবে বেড়ে যাওয়ায় লিচু ফেঁটে ফেঁটে ঝড়ে পড়ছে। এর জন্য আমরা কৃষকদের সন্ধ্যার আগে বিকালে তাপ কমে আসলে লিচু গাছে শুধু পানি স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি। সেই সাথে রোদের সময় ১ গ্রাম করে দস্তা এবং ১ গ্রাম করে ব্রণ পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পরামর্শ মতে কাজ করলে লিচু ফেঁটে যাওয়া এবং ঝড়েপড়া অনেকাংশে কমে আসবে।