চাটমোহর সরকারি কলেজের (সদ্য জাতীয়করণকৃত) অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে এবং দূর্নীতির ফিরিস্তি জানিয়ে কলেজের শিক্ষকরা চাটমোহর পৌর শহরে ব্যাপক পোস্টারিং করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে শহরজুড়ে এই পোস্টার সাটানো হয়। পোস্টারে উল্লেখিত ১২ দফার মধ্যে বলা হয়েছে,অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান প্রতারণার মাধ্যমে ১২ বছরের কম অভিজ্ঞতা নিয়ে এবং সহকারী অধ্যাপক না হয়েও ফরিদপুর উপজেলার দিঘুলিয়া এ জেড স্কুল এন্ড কলেজে প্রতারণার মাধ্যমে নিয়োগ লাভ করেন,অধ্যক্ষ কলেজ সরকারিকরণ ঘোষনা হওয়ার পর গভর্নিং বডিকে না জানিয়ে ব্যাক ডেট দিয়ে রেজুলেশন টেম্পারিং করে রাতের অন্ধকারে জনবল কাঠামোর অতিরিক্ত ২২ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেছেন,অধ্যক্ষ স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজ স্ত্রী,বোন,শ্যালক-শ্যালিকা,চাচাতো,ফুফাতো,খালাতো ভাই বোনদের নিয়োগ দিয়ে মেধাবীদের বঞ্চিত করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন অনিয়মের কথা পোস্টারে তুলে ধরে তাঁর অপসারণ দাবি করা হয়েছে। তবে রাতের আঁধারেই সেই পোস্টার তুলে ফেলেন অধ্যক্ষের লোকজন।
অপরদিকে অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে এবং দূর্নীতির ফিরিস্তি জানাতে কলেজের শিক্ষকরা রাস্তায় নামেন। কলেজের অধ্যক্ষর অপসারণ দাবিতে এবং জনমত গঠণেল লক্ষ্যে কলেজের অর্ধশতাধিক শিক্ষক গত বৃহস্পতিবার রাস্তায় নামেন। তারা চাটমোহর পৌর শহরের সর্বত্র অধ্যক্ষের চরম স্বেচ্ছাচারিতা,অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে লিফলেট বিতরণ করেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষকবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন,চাটমোহরের সর্ববৃহৎ বিদ্যাপিঠ এই কলেজটি এখন অধ্যক্ষের গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার। তার কারণেই কলেজটি জাতীয়করণ প্রক্রিয়া ভেস্তে যেতে বসেছে। কারণ হিসেবে শিক্ষকরা বলেন,কলেজের অধ্যক্ষের কম যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকায় তিনি সরকারিকরণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাছাড়া অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান অবৈধভাবে ২২ জন ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন,যাদের সরকারি করণের আওতায় আনতে পারবেন না,সরকারিকরণের আওতায় না আনতে পারলে অবৈধভাবে নেওয়া লাখ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে,কলেজ সরকারিকরণ হলে কলেজ মার্কেটের জামানতের ৩৩ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে এবং অধ্যক্ষের অবৈধ উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে। তারা বলেন,অধ্যক্ষ উপজেলা ও জেলা প্রশাসনসহ সকলস্তরে অসহযোগিতা করছেন। তিনি হাইকোর্টে রিট করে কলেজকে আদালতের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দীর্ঘমেয়াদী অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন। শিক্ষকরা অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে চাটমোহরের জনপ্রতিনিধি,শিক্ষক,সাংবাদিক,ব্যবসায়ী,সরকারি কর্মকর্তাসহ সাধারণ মানুষের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন,‘শিক্ষকদের লিফলেট বিতরণ ও পোস্টারিং করা ষড়যন্ত্রেরই অংশবিশেষ। তারা নানা অপপ্রচারে নেমেছেন। চাটমোহর সরকারি কলেজের কতিপয় শিক্ষক জামায়াত নেতা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী,চাটমোহর উপজেলা শাখার সাবেক সেক্রেটারী মুক্তি মাহমুদ এর নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে,কলেজের বিরুদ্ধে ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মনগড়া মিথ্যা প্রচারপত্র বিলি করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুনাম নষ্ট করা ও পড়ালেখার পরিবেশ নষ্ট করাসহ কলেজটি ধ্বংস করার জামায়াতের যে পরিকল্পনা তা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।