চাটমোহর সরকারি কলেজ জাতীয়করণের পদ সৃষ্টির তথ্য ছকে অধ্যক্ষ কর্তৃক শিক্ষকদের প্রত্যায়নপত্রে মিথ্যে তথ্য প্রদানের প্রতিবাদে এবং অনিয়ম,দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমানের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলেজের শিক্ষকমন্ডলীর উদ্যোগে কলেজের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে জনপ্রতিনিধি,শিক্ষক-শিক্ষার্থী,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ,ব্যবসায়ী,কলেজের প্রাক্তণ শিক্ষার্থী,সাবেক শিক্ষক ও এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন। অধ্যাপক আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন,চাটমোহর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোঃ আঃ হামিদ মাস্টার,ভাইস চেয়ারম্যান ইসাহক আলী মানিক,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা পারভীন,সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল করিম খান আরজ,অধ্যাপক লিলি আকতার,স্বাচিপ পাবনা জেলা সভাপতি ডাঃ মোঃ গোলজার হোসেন,ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বেলাল হোসেন স্বপন,পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ইদ্রিস আলী,উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব বিশ্বাস,কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জুয়েল,সাবেক ছাত্র মোজাম্মেল হক,রিপন হোসেন প্রমূখ।
জাতীয়করণের পদ সৃষ্টি নিয়ে ও শিক্ষকদের আত্তীকরণের ফাইল সংশ্লিষ্ট দপ্তরে না পাঠানোর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন কলেজের শিক্ষকেরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে তারা উপজেলার সর্বত্র লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার সাটাচ্ছেন। কলেজের অর্ধশতাধিক শিক্ষক এই কর্মসূচীতে অংশ নিচ্ছেন। এরআগে ১৪ মে কলেজের ৪১জন শিক্ষক জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে অধ্যক্ষসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি জিডি করেন। ১৫ মে অধ্যক্ষ পাল্টা আরেকটি জিডি করেছেন। একই সাথে অধ্যক্ষ গত ২০ মে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। যার নং ৫৯৪১। অপরদিকে কলেজের সভাপতি ও অধ্যক্ষের সমন্বয় না হওয়ায় কলেজে সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার ১৩৮ জন শিক্ষকের আত্তীকরণের ফাইল চাটমোহর থানার নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠিয়েছেন।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেন,অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান প্রতারণার মাধ্যমে ১২ বছরের কম অভিজ্ঞতা নিয়ে এবং সহকারী অধ্যাপক না হয়েও ফরিদপুর উপজেলার দিঘুলিয়া এ জেড স্কুল এ- কলেজে প্রতারণার মাধ্যমে নিয়োগ লাভ করেন,অধ্যক্ষ কলেজ সরকারিকরণ ঘোষনা হওয়ার পর গভর্নিং বডিকে না জানিয়ে ব্যাক ডেট দিয়ে রেজুলেশন টেম্পারিং করে রাতের অন্ধকারে জনবল কাঠামোর অতিরিক্ত ২২ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেছেন,অধ্যক্ষ স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজ স্ত্রী,বোন,শ্যালক-শ্যালিকা,চাচাতো,ফুফাতো,খালাতো ভাই বোনদের নিয়োগ দিয়ে মেধাবীদের বঞ্চিত করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরে তাঁর অপসারণ দাবি করা হয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকবৃন্দ আরো অভিযোগ করেন,চাটমোহরের সর্ববৃহৎ বিদ্যাপিঠ এই কলেজটি এখন অধ্যক্ষের গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার। তার কারণেই কলেজটি জাতীয়করণ প্রক্রিয়া ভেস্তে যেতে বসেছে। তিনি হাইকোর্টে রিট করে কলেজকে আদালতের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দীর্ঘমেয়াদী অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন,‘শিক্ষকদের লিফলেট বিতরণ,পোস্টারিং করা ও মানববন্ধন করা ষড়যন্ত্রেরই অংশবিশেষ। তারা নানা অপপ্রচারে নেমেছেন। চাটমোহর সরকারি কলেজের কতিপয় শিক্ষক কলেজের বিরুদ্ধে ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছেন। জাতীয়করণের কাজ সহজ করতেই আদালতে রিট পিটিশন করা হয়েছে।