খুলনার পাইকগাছা পৌরসভার কোল ঘেষে প্রবাহিত শিবসা নদী। দু’পাড়ে অবৈধ দখল আর দূষণে ক্রমেই রুগ্ন হয়ে এক সময়কার ঐতিহ্যবাহী খর¯্রােতা শিবসা নদী মৃত। নেই কোনো জোয়ার ভাটার উত্তাল ঢেউ। হারিয়ে গেছে যৌবন। নদীর বক্ষে পলি জমে ভরাট হয়ে প্রায় সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। পৌরসভার শিববাটী ব্রিজ থেকে সোলাদানা বাজার পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার পলি জমে ভরাট হয়েছে। এর মধ্যে পৌরসভার শিববাটী ব্রিজ হতে বয়রা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার নদীতে ভাটার সময় কোনো পানি থাকে না। কালের বিবর্তনে নদীটি ভরাট হয়ে দু’পাড়ে জেগে উঠেছে বিশাল বিশাল চর। চরে একের পর এক জন্ম নিচ্ছে কেওড়া, ওড়া, বাইন, গোলপাতা সহ বিভিন্ন প্রজাতির বনজ বৃক্ষ এবং নদীটির চর ভরাটি এলাকায় একের পর এক দখল করে নিচ্ছে ভূমি দস্যুরা। হারিয়ে যাচ্ছে শিবসার অতীত ঐতিহ্য। জোয়ারের সময়ও নদীটি লোকজন হেটে এপার-ওপার যাতায়াত করছে। অথচ কয়েক বছর পূর্বে এ নদীতে সব সময় চলতো অসংখ্য নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার সহ ইঞ্জিন চালিত নৌযান। ইঞ্জিন না থাকলেও একসময় পাল তোলা নৌকায় বসে মাঝিরা চলতো তাদের গন্তব্যে। এ নদী ছিল অনেকের জীবন-জীবীকার প্রধান উৎস। যার মধ্যে মাছ শিকার, খেয়া পারাপার, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত, কিংবা নৌভ্রমণ। যা আজ শুধুমাত্র কালের সাক্ষী হয়ে আছে। নদীর প্রবাহ না থাকায় অতিবৃষ্টিতে জলমগ্ন হচ্ছে নি¤œাঞ্চল। এমনি অবস্থায় উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী সোলাদানা ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা নিরাসনে ৫৭ কোটি টাকা ব্যায়ে শিবসা নদী খনন এ প্রকল্প আগামি জানুয়ারি বাস্তবায়ন করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি জানান, জলাবদ্ধতা নিরাসনে শিববাটি ব্রিজ থেকে সোলাদানা বাজার পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিলোমিটার মরা শিবসা নদী খনন জানুয়ারি মাসে শুরু হবে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মাদ আলী জানান, মরা শিবসা খনন হলে উপজেলা আবার প্রাণ ফিরে পাবে; জলাবদ্ধতা নিরসন হবে, বসবাস উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হবে; পানি প্রবাহ বাড়বে; কাঁকড়া ও চিংড়ি উৎপাদনে লোনা পানি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।