লক্ষ্মীপুরে চাঁদা দাবিসহ টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে মারধরের ঘটনায় থানায় পৃথক পৃথক মামলার এজহার দেয়াসহ আওয়ামী লীগের দুই নেতা পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান সোমবার (২৭ মে) দুপুরে
লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে ও জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক মামুনুর রশিদ মামুন স্থানীয় একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেন। এদিকে দলীয় পৃথক দুটি মামলার এজহার দেয়াসহ চাঁদা দাবিসহ টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে মারধরের ঘটনায় নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহেরের পরিবারকে জরিয়ে বড় ছেলে আফতাব উদ্দিন বিপ্লব নিজে সংবাদকর্মীদের নিকট চাঁদা দাবিসহ টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনা বক্তব্য না দিলেও এমনকি মিডিয়ার সামনে এসে কথা না বল্লেও তার অনুসারী হিসেবে সংবাদ সন্মেলন করেছেন মেসার্স মান্নান ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান। তিনি সংবাদ সন্মেলনে জানান, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহেরের পরিবারের বড় ছেলে আফতাব উদ্দিন বিপ্লবকে বিরুদ্ধে জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক ও ঠিকাদার মামুনুর রশিদকে চাঁদার দাবিতে মারধরের অভিযোগকে কেন্দ্র করে এই উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করছে এমনকি দলীয় নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে প্রবাহকান্ড করছে এ নিয়ে তাদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মান্নান আরো উল্লেখ করেন ইট ও পাথর দেওয়ার কথা বলে শ্রমিক লীগ নেতা মামুন ও আশরাফসহ সহযোগীরা তার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়েছে। টাকা চাইতে গেলে তারা এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে তাকে জখম করে। একপর্যায়ে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে একটি নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অপরদিকে আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠা মেসার্স রিয়া এন্টার প্রাইজের স্বত্তাধিকারী ও শ্রমিক লীগ নেতা মামুন জানান, ২২ মে রাতে ‘ঈদ খরচের’ জন্য ২০-২৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে বিপ্লবের লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় লক্ষ্মীপুর শহরে যাওয়ার পথে তার শার্টের কলার ধরে বিপ্লব ও আসামিরা তমিজ মার্কেট এলাকার পিংকি প্লাজার নিচে নিয়ে যায়। এ সময় মাথায় পিস্তল ধরে বিপ্লব ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বলে তিনি অভিযোগ করেন। টাকা দিতে অপারগতা জানালে তাকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মেরে শরীরে জখম করা হয়। এ ঘটনায় বিপ্লবসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন,সাবেক রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় লক্ষ্মীপুরে খুনের মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত মুক্তি হয়ে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আবু তাহেরের বড় ছেলে আফতাব উদ্দিন বিপ্লব একের এক টেন্ডার নিয়ন্ত্রণর করছেন। এর জের ধরে উদ্বুদ্ধ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অন ইচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার ও স্থানীয়রা জানান,টেন্ডার নিয়ন্ত্রনে জনপ্রতিনিধি সহ রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা তদবির সহ নানামুখি হস্তক্ষেপ করায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠে। এসবের কারণে আগে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে চত্রভঙ্গ করে দেয়। এখন আবার টেন্ডা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে নতুন সংঙ্গাতের জন্ম হচ্ছে, এ নিয়ে নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তারা যেকোনো সময় সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন, চাঁদা দাবি ও মারধরের ঘটনায় থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত দু‘পক্ষের কেউ আটক হয়নি অভিযোগগুলো তদন্ত চলছে। তদন্তে পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।