রাজশাহীর বাঘায় খাল খনন নিয়ে দুই পক্ষ পাল্টা পাল্টি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে এক পক্ষ খাল খনন বন্ধ রাখার দাবি নিয়ে আদালতের স্বরনাপণ্য হয়ে শনিবার মানববন্ধন করেন। অন্যদিকে আরেক পক্ষ খাল খননের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধন করেন। উপজেলার ঢাকাচন্দ্রগাথী গ্রামে পৃথকভাবে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ বিষয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে অতিশ্রীগর্ঘই বসে সমন্বয় করা হবে বলে জানান উপজেলা প্রশাসন।
জানা যায়, উপজেলার মশিদপুর পদ্মা নদীর মুখে রয়েছে একটি স্লুইজ গেট। স্লুইজ গেট থেকে উপজেলার হিজোল পল্লী, আরিফপুর, বাজিতপুর, নওটিকা ও বারখাদিয়া বিলে পানি প্রবেশ করতো। ফলে উপকৃত হতো কৃষকরা। পরবর্তীতে মূল নদী পদ্মার রুপ পরিবর্তন হওয়ায় কতিপয় কিছু ব্যাক্তিরা খালের বিভিন্ন স্থানে মাটির বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয় কৃষক। কিছুদিন আগে ৮ দশমিক ২ কিলোমিটার এ খালটি ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ শুরু করে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। ফলে শতশত কৃষক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও কিছু মানুষ বাধা সৃষ্টি করে। ফলে খাল খনন বন্ধ রয়েছে।
খাল খননের পক্ষে স্থানীয় মহিউল হাসান টিনি বলেন, একসময় জমি উর্ববতার জন্য মশিদপুর পদ্মা নদীর মুখে দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করানো হতো। এতে সমতল এলাকায় জমিতে পলি মাটি পড়ে উর্ববরতা বৃদ্ধি পেতো। মোকা-মাকড় ধবংস হতো। এ ছাড়া শুকনো মৌসুমে পানি ধরে রাখা এবং বর্ষা মৌসুমে নিস্কাশনের জন্য মন্ত্রীর সুপারিশে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রকল্প অনুমোদন নিয়ে ৭টি স্থানে ভেকু দিয়ে খনন কাজ শুরু করা হয়। খনন কাজ ১০০ ভাগের মধ্যে ৮০ ভাগ কাজ ইতোমধ্যে সম্পর্ণ হয়েছে। কিন্তু কিছু মানুষ ধানী জমি দাবি করে আদালতে মামলা করে শনিবার একটি মানববন্ধন করেন। এর ফলোশ্রুতিতে এলাকার স্থানীয় কৃষকরা ফুসে উঠে গতকাল মঙ্গলবার ”পুকুর খনন বন্ধ করো” ”খাল খনন অবমুক্ত করো” এ স্লোগানের মধ্য দিয়ে পাল্টা আরেকটি মানববন্ধন করা হয়েছে।
খাল খননের বিপক্ষে ও মামলার বাদি তমেজ উদ্দিন, মোজাহার হোসেন, আবুল কাশেম ও রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের রের্কডকৃত দখলীয় সম্পত্তির উপর প্রায় ৩৫ বছর আগে জিয়া সরকারের সময় খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার উদ্দ্যোগ নেয়। এ সময় আমাদের সম্পত্তি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখানোর পর তারা খাল খনন বন্ধ রাখেন। কিন্তু বর্তমান সরকার আমলে এসে মন্ত্রীর সুপারিশে একটি প্রকল্প বরাদ্দ হয়। এটি রক্ষা করতে আমরা পৃথকভাবে আদালতে ৪টি মামলা করে গত তিনদিন পুর্বে শনিবার একটি মানববন্ধন করেছি।
রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারি প্রকৌশলী সেলিম রেজা বলেন, খাল খননের বিষয় নিয়ে একটু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি। তিনি পক্ষ ও বিপক্ষের লোকজনের সাথে বসে একটি সমন্বয় করে দিবে। তবে বাঘার মানুষের উন্নয়নের জন্য মন্ত্রী মহদয়ের সুপারিশে প্রকল্প অনুমোদন হয়। সেই মোতাবেক কাজ শরু করা হয়েছিল। বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, খাল কখনো ব্যাক্তি মালিকনা জমি হতে পারেনা। এখানে একটি পক্ষ আদালতের স্বরনাপূণ্য হলেও অপর পক্ষ খাল খননের পক্ষে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। আমি এক পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে ডেকেছিলাম। তাদের মধ্যে ২২ সালের রেকর্ডে কারো নাম নেই। ৭৪ সালের রেকর্ডে দু/এক জনের নাম থাকলেও কিভাবে তারা জমি পেলেন সঠিক দলিল কেউ দেখানে পারেনি। তবে দুই পক্ষকে ডেকে খুব শ্রীর্ঘই বিষয়টি সমন্বয়ে বসবো।