ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এক অপহরনকারীর অত্যাচার-নির্যাতন থেকে তার স্কুল শিক্ষিকা মেয়েকে রক্ষা এবং ওই অপহরনকারীকে গ্রেফতারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পিতা মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল ইসলাম। গতকাল যুধবার দুপুরে গফরগাঁও প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেন, তার মেয়ে রেজবীন নাহার (৩০) উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের লামকাইন মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। গত ২৯ এপ্রিল, সোমবার সকালে রেজবীন নাহার নিজ বাড়ি দত্তেরবাজার ইউনিয়নের বিরই গ্রাম থেকে ইজিবাইকে স্কুলে যাচ্ছিল। ইজিবাইকে আগে থেকে অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী যাত্রী বেশে ওঁৎ পেতে ছিল। ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় আল আমিন রনি গফরগাও-টোক সড়কের বারইগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় কৌশলে রেজবীন নাহারকে অজ্ঞান করে সিএনজিতে উঠিয়ে অপহরণ করে ঢাকার খিলগাঁও সিপাহীবাগ এলাকায় নিয়ে যায়। এ অপহরণে ঘটনায় গত ১ মে পাগলা থানায় মামলা দায়ের করা হলে ঘটনার পাঁচ দিন পর ৩ মে, শুক্রবার সকালে পাগলা থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার ডেমরার হাজী রোড ষ্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় রনির আত্মীয়বাসা থেকে স্কুল শিক্ষিকা রেজবীন নাহারকে উদ্ধার করে। পরে ৪ মে স্কুল শিক্ষিকা রেজবীন নাহার ময়মনসিংহ জেলা আদালতের প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিষ্ট্রেট দেওয়ান মনিরুজ্জামানের কাছে তাকে অপহরণ ও জিম্মি করা এবং পুলিশের উদ্ধারের ঘটনা বর্ননা দিয়ে ২২ ধারায় লিখিত জবানবন্দি দেয়।
স্কুল শিক্ষিকা রেজবীন নাহারের বড় ভাই সোহাগ আহমেদ অপু জানায়, ঘটনার সময় আল আমিন রনি তার বোনের সাথে থাকা ব্যাংকের চেকবই, মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং একসাথে ছবি তুলতে বাধ্য করে। রনি ও তার সঙ্গী একরাম উল্লাহ স্কুল শিক্ষিকা রেজবীন নাহারকে বারবার চাপ প্রয়োগ করে তার স্বামী জহিরুল ইসলামকে তালাক দিয়ে প্রতি মাসের বেতনের টাকা রনির হাতে তুলের দেওয়ার জন্য। বেতনের টাকা না দিলে এবং স্বামীকে তালাক না দিলে রেজবীন নাহারের মুখ মন্ডল অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল ইসলাম আরো অভিযোগ করে বলেন, একরাম উল্লাহ’র সহযোগিতায় রনি পৌরসভার ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের কাজী নুরুজ্জামান বুলবুলের মাধ্যমে জাল কাবিননামা তৈরী করে। এই জাল কাবিননামা এবং অপহরনের সময় আমার মেয়ের সাথে রনির জোরপূর্বক তোলা ছবি ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করছে। তিনি অপহরনকারী আল আমিন রনিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে তার স্কুল শিক্ষিকা মেয়ে ও তাকে অত্যাচার, নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচানোর দাবী জানান।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, পাগলা থানার এসআই মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, আসামি রনি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্কুল শিক্ষিকার বড় ভাই সোহাগ আহমেদ অপু, মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ, মুক্তিযোদ্ধা আক্কাছ আলী, আবদুল জব্বার, এমদাদুল হক, সিরাজুল ইসলাম ও আবু হানিফ প্রমুখ।