দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও ধানের দাম কম হওয়ায় ফলে মুখে হাসি নেই কৃষকের। ধান কেটে ঘরে উঠলেও মজুরি পরিশোধ করে ধান বিক্রি করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে কাহারোলের কৃষকদের। ধারদেনা করে বোরো ধান চাষের পর ধানের মূল্যে কমে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষের মাথা থেকে ধারের বোঝা নামাতে পারছে না কৃষক। ধান চাষের শুরুতে বিভিন্ন দোকান থেকে কৃষি উপকরণ সার, টিএসপি, ডিএপি সহ কৃষি উপকরণ দোকান থেকে বাকীতে ক্রয় করে ধান চাষ করেছে। ধান বিক্রি করে তা পরিশোধ করার কথা। ধানের দাম না থাকায় ধান ঘরে তোলার পরেও দোকানে বাকী পরিশোধ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছে শত শত কৃষক। আর সামনে অসন্ন ঈদুল-ফিতর। এ নিয়ে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষের দু’চোখে শর্ষে ফুল দেখছে। এদিকে কাহারোল খাদ্যগুদামে সরকারি ভাবে ১৬১ মে. টন ধান ক্রয় শুরু হলেও বাজারে এর কোন প্রভাব পড়ে নি।
উপজেলা নয়াবাদ গ্রামে বর্গাচাষি সতিশ চন্দ্র রায় জানান, তিন বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছে। ৪৫০ টাকা মন ধান বিক্রি করে খরচ উঠছে না। ধানের চাষ করি কি করে। দেড় মণ ধান বিক্রি করে ১ কেজি খাসির মাংস কিনতে হচ্ছে। অন্যান্য বাজার করতে হলে বাড়তি ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। গতকাল শনিবার কাহারোল হাটে প্রতিমণ ধান বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। ধানের মূল্যে কম হওয়ায় কৃষকেরা পড়েছে বিপাকে। প্রায় অর্ধশতাধিক মধ্যবিত্ত কৃষকের সাথে কথা বললে তারা জানায় সরকারি গুদামে ধান কিনছে ২৬ টাকা কেজি দরে।
যাদের ১ টন ধান বেচার সাধ্য নেই। যারা ১০ মণ, ৫ মণ, ৩ মণ ধান বিক্রি করে চাহিদা মেটাবে তারা কোথায় যাবে। ধানের দাম নেই বাজারে। এ অবস্থায় মধ্যবিত্ত কৃষকেরা ঋণের দায় মেটাতে পারছে না। একই সাথে যোগ হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফেতরের কেনাকাটা।
উভয় সংকটে শতশত মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষ ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ছে। কাহারোল বাজারে ব্যবসায়ী তাইজুল ইসলাম বলেন, বিআর-২৮ ধান কেনাবেচা করা হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকা পর্যন্ত। জিরা ধান বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা, বিআর-৫৮ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। তিনি বলেন ধান কিনে ঘরে রেখেছি। বিক্রি করতে পারছি না। ধানের দাম না থাকায় কোন ব্যবসায়ীর মনে শান্তি নেই।