ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর গোপালপুর টু মৈনট ঘাট দিয়ে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ঘরমুখো ঈদযাত্রীর ঢল। বছর ঘুরে নারের টানে মায়ের কোলে ফিরতে গিয়ে হাজারো দুর্ভোগ শিকার করে ট্রলার ও ষ্পীডবোট দিয়ে পদ্মা নদী পারাপার হচ্ছেন যাত্রীরা। আসন্ন ঈদুল ফিতর উদযাপনের জন্য রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কর্মজীবীরা উপজেলার গোপালপুর টু মৈনট ঘাট দিয়ে বাড়ী ফিরছেন। অতিরিক্ত ভাড়া প্রদান, ফিটনেসহীন ষ্পীডবোট ও ট্রলার সহ হাজারো বিড়ম্বনা শিকার করে চরম ঝুঁকির নিয়ে প্রায় ৬ কি.মি. পদ্মা নদী পার হয়ে চলেছেন ঘরমুখো ঈদ যাত্রীরা।
শনিবার দুপুরে ওই ঘাট দিয়ে পদ্মা নদী পার হয়ে আসা এক যাত্রী শাহাদাৎ হোসেন (৪৫) জানান, “ প্রত্যুষে রাজধানী ঢাকার আগারগাও এলাকা থেকে রওয়ানা দুপুর সাড়ে ১২টায় পদ্মাপ নদীর মৈনট ঘাটে এসে পৌছেছি। ঘাট কতর্ৃৃপক্ষ অগ্রিম ২শ’ টাকা নিয়ে ষ্পীডবোটের একটি টিকিট দিলেও তাতে কোনো মূল্য উল্লেখ নাই। রমজানের এ রোজা অবস্থায় প্রচন্ড খড়তাপের মধ্যে প্রায় আধা ঘন্টাকাল দাঁড়িয়ে থেকে ষ্পীডবোটে উঠার সিরিয়াল পেয়েছি। পদ্মা নদী পার হতে খোলা ষ্পীডবোটের প্রায় সব যাত্রী প্রায় ২০ মিনিট পর্যন্ত ঢেউয়ের আঘাতের পানিতে ভিজেছেন। যাত্রীদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশী ভোগান্তির শিকার হয়ে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও তিনি জানান”। একই সময় আরেক ট্রলার যাত্রী সোহেল রানা (২৫) বলেন, “ আমি ঢাকায় পেটেভাতে পেইনন্টিংয়ের কাজ শিখি। আসার সময় ঈদ বকসিস হিসেবে গ্রেজ মালিক মাত্র ৫শ’ টাকা দিয়েছে। তাই মৈনট ঘাটে এসে পদ্মা নদী পার হতে ট্রলারে উঠি। কিন্তু অগ্রিম ভাড়া কেটে ট্রলারটি ছেড়েছে। কিছুদিন আগে ঢাকা যাওয়ার সময় এ ঘাটেই ট্রলারে ৮০ টাকা ভাড়ার স্থলে আকুতী করে ৬০ টাকা দিয়ে পদ্মা পার হয়ে গেছি। মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে ঈদে বাড়ী ফিরতে গিয়ে আজকে ট্রলার ভাড়া দিতে হয়েছে ১২০ টাকা। মাত্র ৬কি.মি. পদ্মা নদী পার হতে এ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় চরম অমানবিক বলেও সে হতাশা ব্যক্ত করে ”।
এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা বলেন, পদ্মা নদীর অপর পারে মৈনট ঘাটটি দোহার উপজেলার আওতায়। তাই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ওই ঘাটটি দেখাশোনা করবেন। উপজেলার গোপালপুর ঘাট থেকে ঈদের নামে অতিরিক্ত কোনো ভাড়া আদায় হচ্ছে না বলেও তিনি জানান”। আর গোপালপুর ঘাট ইজারাদার মোঃ শাহীন শিকদার ওরফেন বাবুল শিকদার বলেন, “ ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখন শুধু যাত্রীরা মৈনট ঘাট দিয়ে বাড়ী ফিরবেন। তাই উপজেলা পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাটে ভাড়া বৃদ্ধি করার কিছুই নেই। ঈদ শেষে ঢাকামুখী যাত্রীরা এ ঘাট দিয়ে পার হবেন বলেও তিনি জানান”।
শনিবার পদ্মা নদীর ওই ঘাট ঘুরে জানা যায়, আসন্ন ঈদ যাত্রী বহনের জন্য পদ্মার দু’পারে দুটি ঘাটে মোট ৩০টি ষ্পীটবোট ও ২০টি ট্রলার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি ছোট ষ্পীডবোটে ১০ জন এবং বড় ষ্পীডবোটে ২০ জন করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। ট্রলারে যাত্রী বোঝাইয়ের কোনো নির্দিষ্ট পরিমান উল্লেখ নেই। ট্ররারের ভিতরের অংশে ও ছইয়্যায় কানায় কানায় পূর্ণ অবস্থায় পারাপার হচ্ছেন ঘরমুখো মানুষগুলো। এতে বৈরী আবহাওয়ার পাকে পড়লে বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও রয়েছে”।