উত্তর জনপদের পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ ও আসন্ন ঈদুল ফিতরের আনন্দ উৎসবকে আরো মতমাতানো করতে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আশুড়ার বিল জাতীয় উদ্যানে উদ্বোধন করা হলো ৯০০ মিটার দীর্ঘ আঁকাবাঁকা দৃষ্টি নন্দন শেখ ফজিলাতুন নেছা কাঠের সেতু।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান, বন বিভাগ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের প্রচেষ্টায় এই কাঠের সেতুটি তৈরী হয়।
গতকাল শনিবার সেতুটি উদ্বোধন করেন, দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ও জেলা প্রশাসক মাহামুদুল আলম।
জানা গেছে, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আশুড়ার বিলকে শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান হিসাবে ২৪ অক্টোবর ২০১০ সালে গেজেট প্রকাশিত হয়। এই জাতীয় উদ্যানের আয়তন ৫১৭.৬১ হেক্টর বা ১২৭৮.৪৯ একর। জাতীয় উদ্যানের ভিতরে বিশাল শাল বন ছাড়াও আশুড়ার বিল, সীতার কোট বিহার ও বাল্মিকী মনির থান অবস্থিত। জাতীয় উদ্যানকে সুন্দর ভাবে ফুটে তোলার জন্য আশুড়ার বিলকে পরিচর্যা উদ্যোগ হাতে নেন ইউএনও মশিউর রহমান। তিনি এই আশুড়া বিলে নিজে ও সঙ্গি সাথি নিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মনমাতানো নান্দনিক এই বিলটির বর্ষা মৌসুমে দেশি প্রজাতির মাছ, হারিয়ে যাওয়া জাতীয় শাপলা ফুলের বিস্তার সব মিলেই পর্যটকেরা এখানে বারবার আসতে চাইবেন।
বিলটির গুরুত্ব তুলে ধরতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেন একের পর এক উদ্যোগ। শাপলা ফুলের বংশ বিস্তারে ফুলের চারা রোপন আশুড়ার বিলের ধারে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চারা লাগানো, জাতীয় উদ্যানের শাল গাছে পাখির অভয়াশ্রমের জন্য মাটির হাড়ি ঝুলিয়ে পাখির আবাসস্থানের ব্যবস্থা করণ সহ আধুনিকায়নে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ।
পর্যটকদের আকর্ষণে কাঠের আঁকাবাঁকা সেতুটি নির্মান থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারে মুগ্ধ হচ্ছেন স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন এলাকার পর্যটকরা। ঈদ আনন্দ ছাড়াও পর্যটকরা এখানে দলে দলে আসবেন এতে কোন সন্দেহ নেই।
এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দিনাজপুরের পক্ষ থেকে উন্নতমানের ল্যাট্রিন, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা সহ বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
আসার পথ দেশের যে কোন জেলা থেকে বিরামপুর ঢাকা মোড় এসে নবাবগঞ্জ রোডে শওগুনখোলা গ্রামের আদর্শ ক্লাব থেকে উত্তর দিকে আড়াই কিলোমিটার জাতীয় উদ্যান শালবনে ভিতর দিয়ে রাস্তা দিয়ে যেতে হবে। আশুড়ার বিল থেকে আবার শালবনে মধ্য দিয়ে নবাবগঞ্জ সদরে তিন কিলোমিটার অতিক্রম করে উপজেলা সদরে আসা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী মশিউর রহমান জানান, এই বিলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সামান্য খরচে কাঠের আকাঁ বাকাঁ সেতুটি তৈরী করতে চেষ্টা করেছি। এ ছাড়া বন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বনে বিভিন্ন জাতের গাছ রোপন ও হারিয়ে যাওয়া প্রজাতি পাখির বাসা তৈরীর চেষ্টা করেছি।
এদিকে, দিনাজপুর-৬ আসনের এম,পি শিবলী সাদিক বলেন, এই জাতীয় উদ্যানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আগামীতে শিশুদের খেলাধুলার প্রয়োজণীয় সরঞ্জামাদি সংযুক্ত করা হবে। এই উদ্যানে ১৩০০ একর বিশাল শালবন রয়েছে এবং ৬০০ একর জলা ভূমি রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এখানে সুইচ গেট নির্মাণসহ সব ধরণের বিনোদন ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।