দেশের গুরুত্বপূর্ন নৌপথ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া দিয়ে প্রতিদিন দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার হাজার হাজার যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হয়। ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে এই রুটে, স্বাভাবিকের চেয়ে এখন তার পরিমান দাড়িয়েছে কয়েকগুণ।
বিআইডব্লিটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, স্বাভাবিক সময়ে এই নৌপথ দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ছোট বড় যানবাহন পারাপার করা হয়। এখন ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ হাজার যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
এছাড়াও বিআইডব্লিটিএ দৌলতদিয়া কার্যালয় সুত্রে জানাগেছে, স্বাভাবিক সময়ে এই নৌপথে ১৪-১৫ টি ফেরি চললেও ঈদ উপলক্ষে এখন ২০ টি ফেরী চলাচল করছে। এই রুটে লঞ্চ চলাচল করছে ২২টি এতে প্রতিদিন পার হচ্ছে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
সোমবার দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাটে দেখাযায়, প্রিয়জনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছে মানুষ। সোমবার সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ফেরিঘাট ও লঞ্চ ঘাটে ছিলো উপচে পড়া ভীর। তবে ছিলো না কোন ভোগান্তি। যাত্রীরা জানান কোন প্রকার ভোহান্তি ছাড়াই ঢাকা থেকে ফিরতে পারছে তারা। পথে পথে এ বছর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখেও সন্তুষ্ট তারা।
এদিকে ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে ঈদ পূর্বের ৩ দিন এবং পরের ৩ দিন সকল প্রকার পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। এক্ষেত্রে পচনশীল ও জরুরী পণ্যবাহী ট্রাকগুলো পরিবহনের সঙ্গে পারাপার হচ্ছে। এছাড়াও আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘাট এলাকায় র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং আনসারসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। এদিকে ভোগান্তি কমাতে এ বছর নদীর দৌলতদিয়া প্রান্তে ৬টি ঘাটই সচল রেখেছে কর্তৃপক্ষ। ঘাট এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে ৪ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। রয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।
দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে কর্মরত বিআইডব্লিটিএ’র সুপার ভাইজার কোরবান আলী জানান, এর আগের ঈদগুলোর চেয়ে এ বছর ভোগান্তি কমাতে একটু আলাদা কর্মপরিকল্পনা করা হয়েছে। এ বছর আমরা নিজেরা লঞ্চ তদারকি করছি। কোন লঞ্চে বাড়তি যাত্রী যাতে না নিতে পারে সেজন্য ভ্রাম্যমান আদালত রয়েছে। পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া এসে কোন লঞ্চ যাত্রী না হলেও এক মিনিট ও বসে থাকার সুযোগ নেই সাথে সাথে যাত্রী আনার জন্য ওপারে পাঠানো হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো: আলমগীর হুসাইন বলেন, ভাড়ার বেশি নেওয়ার ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাইনি। ঘাটে আমাদের ম্যাজিষ্ট্রেট আছে তারা বিষয়টি দেখছে। এ ছাড়া গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সার্বক্ষনিক তদারকি করছেন। যাতে করে কেউ কোন প্রকার হয়রানী ছাড়াই নির্বিঘেœ ঘরে ফিরতে পারে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াত শিপলু কে জানান, এখন পর্যন্ত যাত্রী হয়রানী বা কোন প্রকার অভিযোগ আমাদের কাছে আসে নাই। সার্বক্ষনিক আইনশৃংখলা বাহিনীসহ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ঘাট তদারকি করছেন। ভাড়া বা কোন প্রকার অভিযোগ পেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় তিনি যাত্রী হয়রানীর স্বীকার হলে ০১৭৩৩ ৩৩৬৪০৮ নম্বরে জানানোর জন্য বলেন।