খুলনার পাইকগাছায় বাড়ীতে যাতায়াত পথে প্রতিপক্ষ শরিক বিশাল গর্ত খুঁড়ে রাখায় দুর্ভোগে পড়েছে ৩টি পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নগর শ্রীরামপুর গ্রামের মালো পাড়ায়। ভূক্তভোগী পরিবার গুলো থানায় অভিযোগ করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নগর শ্রীরামপুর মৌজার ৩৪ খতিয়ানের ৩৫নং দাগে ৩৬ শতক জমিতে দেবব্রত বিশ্বাস, রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস, শম্ভু বিশ্বাস ও তাদের কাকা পরিমল বিশ্বাসের পরিবার দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছে। তবে পরিমল বিশ্বাসের সাথে ওই জমি নিয়ে তার ভাইপো রবীন্দ্র, দেবব্রত ও শম্ভু বিশ্বাসের দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিমল বিশ্বাস ও তার ছেলেরা গত ২৮মে সকাল ১০টায় পাঁকা ঘর নির্মাণ করবে বলে দ্ইু ঘরের মাঝখান দিয়ে চলাচলের পথ জুড়ে গর্ত খুঁড়েন। এ কাজে দেবব্রত বিশ্বাস বাধা দিলে প্রতিপক্ষ তাদের মারতে উদ্যত হয়। ঐ দিন বিকালে দেবব্রত বিশ্বাস বাদী হয়ে পরিমল বিশ্বাসের ৩ পুত্র জগন্নাথ বিশ্বাস, সুব্রত বিশ্বাস ও মেঘনাথ বিশ্বাসের নামে থানায় অভিযোগ করেছেন।
আরো জানা যায়, জমি নিয়ে শরিকের মধ্যে বিরোধ ছাড়াও ওই সম্পত্তি একই এলাকার শহিদ হাজরা ও তার পুত্র আফজাল হাজরা ক্রয় করেছে বলে কিছু অংশ দখল করে আইচ ফ্যাক্টরি করে ব্যবসা পরিচালনা করছে। এ ঘটনায় ২০১৪ সালে রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস, ঠাকুর দাশ বিশ্বাস ও গুরুচরন বিশ্বাস বাদী হয়ে খুলনা যুগ্ম জেলা জজ চতুর্থ আদালতে দুলাল বিশ্বাস, পরিমল বিশ্বাস, শহিদ হাজরা, আফজাল হাজরা, বিষ্ণুপদ বিশ্বাসের নামে বাটোয়ারা মামলা করেন। মামলা নং-দেঃ ৮৯/২০১৪। মামলা করার পর থেকে শহিদ হাজরা গংরা বাদীদের উপর ক্ষিপ্ত রয়েছেন। বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি ও বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন বলেও রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস জানান। ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল শাহিদা হাজরা ও স্বামী শহিদ হাজরা রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাসের বাড়ীতে ঢুকে উচ্ছেদ, ভয়ভীতি ও গালিগালাজ করায় ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস শাহিদা ও শহিদের নামে থানায় জিডি করেন যার নং-১৮০/১৮। তাছাড়া ২০১৭ সালে আফজাল গংরা মালো পাড়ার যাতায়াতের একমাত্র পথে তিনটি স্থানে লোহার গেট গ্রিল দিয়ে আটকে রাখে। এতে ৫-৭ টি পরিবার প্রতিদিন ১০-১২ ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকত। এ ঘটনায় একাধিক স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় “পাইকগাছায় যাতায়াতের পথ নিয়ে বিপাকে কয়েকটি পরিবার” প্রতি দিন ১০ ঘন্টা শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশি হস্থক্ষেপে তারা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পায়।
এ প্রসঙ্গে পাইকগাছা থানা ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ইমদাদুল হক শেখ জানান, কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাবুলকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কেউ চলাচলের পথ বদ্ধ করতে পারে না। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভূক্তভোগী দেবব্রত বিশ্বাস ও রবীন্দ্র বিশ্বাস জানান, এসআই বাবুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ করেছেন। তবে বাড়ীতে যাতায়াতে পথ জুড়ে গর্ত খুঁড়ে রাখায় বিকল্প পথ না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে। এসআই বাবুল জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উভয় পক্ষের কাগজপত্র নিয়ে বসাবসির দিন নির্ধারন করা হলেও বিবাদীরা সময় নেওয়ায় তদন্তের কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।