ধান উৎপাদনে বিখ্যাত এলাকা হিসেবে পরিচিত রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে উৎপাদন খরচ না উঠায় ও নায্য মুল্য না পেয়ে দিন দিন ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক। ফলে ধান চাষের মৌসুমেও অনেক জমিই অনাবাদি রয়েছে। এতে আর্থিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে কৃষক।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নারুয়া, বালিয়াকান্দি, বহরপুর, ইসলামপুর, জামালপুর, জঙ্গল, নবাবপুর এলাকায় চলতি বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু নায্য মুল্য না পাওয়ায় ৮শত হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। ধান উৎপাদন হয়েছে ৩৩ মেট্রিক টন। ধান চাষীদের কোন প্রকার প্রনোদনা প্রদান করা হয়নি। সরকারী ভাবে খাদ্য গুদামে ২৪ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হয়েছে। এরমধ্যে ৫০জন কৃষক তাদের উৎপাদিত ধান ২০ মেট্রিক টন বিক্রয় করেছে। চাহিদা তালিকা দেওয়া হয়েছিল ৪শত জন কৃষকের।
উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বারুগ্রামের মিল মালিক ও ধানচাষী শ্যামল কুমার দাস বলেন, ভালো ধান উৎপাদিত হলে ২২শতাংশ জমিতে ১৫মন পর্যন্ত হয়ে থাকে। পানি ও সেচ বাবদ ৪ মন ধান ছেড়ে দিতে হয়। বাকী ১১ মনে বর্তমান বাজার মুল্য ৬ হাজার ৬শত টাকা। বাজারে আনতে ভ্যান ও খাজনাসহ ৬শত টাকা খরচ। জমির লীজের ৩হাজার টাকা, রোপন ব্যয় ২হাজার টাকা, সার ও ওষুধ খরচ ২ হাজার টাকা, জমির আগাছা দমনের জন্য ১হাজার ৫শত টাকা, ধান কর্তন করতে ১হাজার ৫শত টাকা, ধান বাড়ীতে পৌছাতে ৪শত টাকা খরচ হয়। এতে প্রতি ২২শতাংশ জমিতে ৪হাজার ৪শত টাকা করে গচ্ছা দিতে হচ্ছে। খড় থেকে যে অর্থ আয় হয় তাতে মাড়াই, ছাড়াই, শোকানোসহ ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচ উঠে। কিছু কিছু ধান রয়েছে যেমন, গুটি স্বর্ণা। এ ধান বাজারে বিক্রি হচ্ছে না। এতে ওই চাষী ধান আবাদ করে বিপাকে পড়ছে।
পাটুরিয়া গ্রামের কৃষক যুগল দাস বলেন, তার নিজের ৬ পাখি, প্রতিবেশি শৈলেন দাসের ১৬ পাখি জমিতে ধান আবাদ করেননি। এমনকি কেউ তার জমি খাজনা বা বর্গা নিতে কেউ আসেনি। ফলে জমি অনাবাদি রাখতেই বাধ্য হই। ওই জমি পরিস্কার করতে কয়েক হাজার টাকা লেগেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সরকারী ভাবে যদি বেশি করে ধান ক্রয় করে তাহলে চাষীরা নায্য মুল্যে পাবে। ফলে ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে।