ময়মনসিংহে যুবলীগ কর্মী শফিকুল ইসলাম সপু হত্যা মামলার প্রধান আসামী দ্বিতীয় স্ত্রী আফরোজা শেখ ইতিকে গেপ্তার করেছে পুলিশ।হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দীও দিয়েছে নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী শেখ ইতি। শুক্রবার বিকালে (১৪ জুন) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতের-১ এর বিচারক মাহবুবা আক্তার এ জবানবন্দী গ্রহন করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই মনিরুজ্জামান জানায়, শফিকুল পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে এবং প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার শর্তে এক বছর আগে ইতিকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়িতেই বসবাস করত শফিকুল। মাঝে মধ্যে লুকিয়ে প্রথম স্ত্রী মাহমুদার সাথে দেখা করত শফিকুল। এটা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারেনি দ্বিতীয় স্ত্রী ইতি।
গত ১০ জুন সকালে শফিকুলকে কোথাও খোঁজে না পেয়ে প্রথম স্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে সেখানে দুজনকে এক সাথে দেখতে পায় ইতি। সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়ার পর নিজ বাড়িতে চলে আসে ইতি। ঐদিন দুপুরে প্রথম স্ত্রীর কাছ থেকে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়িতে আসে শফিকুল। বিকালে পার্শ্ববর্তী হাবুন বেপারীর মোড়ে বিশ্বকাপ খেলা দেখে রাত ১২টার দিকে বাসায় ফিরে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমের টেবলেট খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পূর্বপরিল্পনা মোতাবেক ঘুমের মধ্যেই দ্বিতীয় স্ত্রী ইতি গলায় উড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ হত্যা করে। পরে ভোর হওয়ার আগেই মরদেহটি বিছানার চাদরে করে বাড়ির পাশে একটি পরিত্যাক্ত ডোবায় কচুরিপানার নীচে পুতে রাখে। পরদিন ১১ জুন সেই আফরোজা শেখ ইতি তার স্বামী শফিকুল ইসলাম শপু নিখোঁজ হওয়ার কথা উল্লেখ করে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন (৬৭৬)। এতে বলা হয় যে, ১০ জুন রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে শফিকুল আর বাসায় ফিরে আসেনি।
নিখোঁজের তিনদিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে ইতির বাসা সংলগ্ন একটি পরিত্যাক্ত ডোবায় কচুরিপানার নীচ থেকে শফিকুলের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের মা নুরুন্নাহার বাদী হয়ে আফরোজা শেখ ইতিকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাত ৩/৪জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। রাতেই পুলিশ সুপার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে মামলাটি হস্তান্তর করে এবং ঐ রাতেই ইতিকে গেপ্তার করে পুলিশ।