জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে রাম দা উঁচিয়ে অন্যর জমি জবর দখল ও হামলাকারী ডোয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কামাল হোসেন কে গ্রেপ্তার করেছে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ। গতকাল রোববার ১১ টায় উপজেলার মাজালিয়া গ্রাম থেকে যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন কে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ,সরিষাবাড়ী উপজেলার মাজালিয়া বিলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের কাছ থেকে ১৯৫৩ সালে হাসড়া মাজালিয়া মৌজার ৬১ শতাংশ জমি সাফ কওলামূলে মনিরুদ্দিনের ছেলে মৃত মোজাফফর,মৃত জনো শেখ মালিকানায় ভোগদখল করে আসছিল। ওই জমিতে বসতবাড়ি, পুকুর,কবরস্থান, ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রয়েছে। একই গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানর ছেলে আয়নাল হক, নাতিন মজনু মিয়া তাদের বাপ দাদার জমি দাবি করে বিভিন্ন সময় নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন।ওই জমিজমা নিয়ে কয়েক দফায় গ্রাম্য শালিস পর্যালোচনা অনুযায়ী মৃত মোজাফফরের ছেলে সাইফুল ইসলাম,আব্দুল কাদের, তোষর আলী, শফিকুল ইসলাম ও মৃত জনো শেখের ছেলে চান মিয়া, আলতাব হোসেন, তোতা মিয়া ও লাল চান মিয়া প্রকৃত ভূমি মালিক হিসেবে শালিসনামায় সিদ্ধান্ত হয়। ওই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ১৫ জুন বিকেলে মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে আয়নাল হক, নাতিন মজনু মিয়ার পক্ষে ডোয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কামাল হোসেন ও তার ভাই মিনহাজ আহম্মদ বকস্, মজিবর রহমান, হবিবর রহমান, আব্দুল মানান, ফারুক হোসেন, জয়নাল আবদীন, ফরিদ হাসান, আলী আকবর ও তাদের সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র রাম-দা ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ৬১ শতাংশ জমি বে দখল করার একপর্যায়ে গরু ব্যবসায়ী তোষর আলীর বসতঘরে ঢুকে গরু বিক্রির প্রায় দেড় লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। তারা করাত মিস্ত্রি সুজা মিয়া,আব্দুল খালেককে দিয়ে ওই জমির বাগানের প্রায় অর্ধ শতাধিক ফলজ ও বনজ গাছ কেটে নিয়ে যায় তারা। এ ছাড়াও বাড়ির আঙ্গিনায় থাকা শতাধিক কলাগাছ ও সবজি বাগানের ক্ষতি সাধন এবং জমিতে একটি ছাপরা ঘর তুলে জমি দখল করে।
এ সময় প্রকৃত জমির মালিক আলতাব হোসেন ও তার লোকজনরা বাধা দিতে গেলে যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন রাম দা উঁচিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় তাদের ওপর হামলা চালিয় মারপিট করে। এতে আলতাব হোসেন, রুবেল, কাদের তোতা, চান মিয়া, ঝর্ণা, রওশনারা, অনিক , তকির ও রিপন গুরুতর আহত হয়। গুরুতর আহতদের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদিকে যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন দাবি করে বলেছিলেন,‘আমাকেসহ মজনু,মজিবর, আলী আকবর ও ময়নাকে মারপিট করেছে। জমি আমাদের তাই ঘরবাড়ি উঠাতে এসেছি। ওরাই আমাদের বাধা দিয়েছে।’
এ ঘটনায় মাজালিয়া গ্রামের শাকিলা জামান চান গতকাল রোববার সকালে যুবলীগনেতা কামাল হোসেন সহ ২১ জনকে আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থানার উপপরিদর্শক ইমান আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন কে গ্রেপ্তার করে জামালপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে ঘটনার দিন হামলার সময় কামাল হোসেন ও তার সহযোগীদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রগুলো এ পর্যন্ত পুলিশ উদ্ধার করতে না পারলেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন,এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।মামলাটির প্রধান আসামি কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামি ও দেশীয় অস্ত্রগুলো উদ্ধারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।