শ্রবন ও বাক প্রতিবন্ধী রিনা আক্তার (২৫)। বাবা মোজাম্মেল হক খুলনা জুট মিলে দারোয়ানের চাকুরির সুবাদে সেখানেই থাকাকালিন শিশুকালে ট্রেনের নিচে কাঁটা পড়ে ডান হাত ও ডান পা হারায় রিনা। পরে দুই মেয়েকে রেখে প্রায় ১৫ বছর পূর্বে মারা যান রিনার বাবা। পরে স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুরের গালুয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের পুটিয়াখালিতে একটি খুপড়ি ঘরে কোনমতে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন জয়নব বিবি। ভিক্ষা ও প্রতিবেশীদের সাহায্যেই চলতো তাদের সংসার। তিনিও কিছুদিন পূর্বে মারা যান। এতিম এ ২ মেয়ে কোনমতে ওই খুপড়ি ঘরেই অর্ধাহারে অনাহারে বসবাস করতো প্রতিবেশীদের সহযোগীতায়। ঝড় বৃষ্টি এলে ছোট খুপড়ি ঘরটিতে পানি পড়ত, ভীজে যেত সব। নিরুপায় হয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হতো। প্রতিবন্ধী রিনা আক্তারের এ দুঃখ-দুর্দশা কথা প্রতিবেশী কলেজ ছাত্র মেহেদি হাসান বিষয়টি কয়েকব্যক্তির সাথে আলাপ করলে তারাও এগিয়ে আসেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করে। পরবর্তীতে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে ৬ হাজার টাকা, দুই বান ঢেউটিন দেন। এছাড়াও খাইরুল মুন্সী সাড়ে ৬ হাজার, হেদায়েত ৩ হাজার, জিয়াউজ্জামান পল্টু) ২ হাজার, সৈয়দ আবীর ২ হাজার, সজল ১ হাজার, রুস্তুম ১ হাজার, রাজ্জাক ১ হাজার, রব মুন্সী ৫শ, মনির মুন্সী ৫শ’, সৈয়দ বাপ্পি ২শ টাকাসহ আরও কয়েকজন মিলে আর্থিক সাহায্য করে এবং মিরাজ খান, সৈয়দ সাহাদাৎ ও মেহেদি হাসান তদারকি করে দ্রুত সময়ের মধ্যেই রিনা আক্তারকে টিনের ঘর তুলে দেয়া হয়। বর্তমানে সেই ঘরেই প্রতিবন্ধী রিনা আক্তার বসবাস শুরু করেন। এসব বিষয়ের খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে বৈদ্যুতিক মিটার, যাবতীয় সরঞ্জাম ও পল্লী বিদ্যুতের উপজেলা জুনিয়র প্রকৌশলী আশিকুর রহমানসহ কয়েকজন লাইনম্যানকে নিয়ে ওই বাড়িতে হাজির হন রাজাপুর পল্লী বিদ্যুৎতের সাব জোনাল অফিসের এজিএম রাজন কুমার দাস। তিনি বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে মিটার ফি, ওয়ারিংয়ের তার, লাইট, সুইচ, বোর্ড ও ইলেকট্রিশিয়ান ফি নিজে পরিশোধ করে প্রতিবন্ধী রিনা আক্তারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে ঘর আলোকিত করে দেয়া হয়েছে। এ সময় ওই এলাকার স্বামী মৃত ইয়াসিন হাওলাদারের বিধবা অসহায় সাহা বানুর (৮০) ঘরেও সকল খরচ তিনি দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করে দেন। তিনি এভাবে সমাজের অবহেলিত মানুষদের পাশে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।