পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাংলাদেশি ও চীনা শ্রমিকদের সংঘর্ষে এক চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন অন্তত ৭ জন।
কলাপাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বয়লারের উপর থেকে পড়ে গিয়ে সাবিন্দ্র দাস নামে এক বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এর জের ধরে চীনা ও বাঙালি শ্রমিকরা বিকালে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত অবস্থায় আটজনকে পাঠানো হয় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে জেং ইয়াং খ্যাং নামে ২৬ বছর বয়সী এক চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের পরিচালক বাকির হোসেন জানান।
জানাযায়, নির্মানাধীন পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র অভ্যন্তরে হাজার হাজার বাঙালী শ্রমিকরা হামলা, ভাংচুরসহ ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। বয়লার থেকে নিচে পড়ে সাবিন্দ্র দাস (৩২) এক বাঙালী শ্রমিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে লাশ গুমের চেষ্টার গুজবের খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা হামলে পড়ে।
মঙ্গলবার বিকেল তিনটা থেকে অন্তত ছয় হাজার বাঙালী শ্রমিক তিন সহস্রাধিক চায়নিজ শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিসিপিসিএলএর কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের নিয়োজিত পুলিশ, কলাপাড়া থানার পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
জানা গেছে, ধানখালীর কাজল এন্টার প্রাইজের নিযুক্ত শ্রমিক সাবিন্দ্র দাস এ বছরের ১৪ মে থেকে বিদ্যুত প্লান্টে কাজ করে আসছিল। নিহত সাবিন্দ্রের বাবার নাম নগেন্দ্র দাস। বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার জয়নগর গ্রামে।
বিসিপিসিএল এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহমনি জিকো জানান, ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা গুজবের কারণে উত্তেজিত হয়ে ক্যান্টিনে, অফিসে, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ও ওয়েল্ডারে হামলা-ভাংচুর চালায়। এখনও হামলার শঙ্কায় রয়েছেন এ কর্মকর্তা।
কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রে উদ্ভুত পরিন্থিতি সামাল দিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে হেলিকপ্টারে করে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রে এসে পৌছেছেন। বিদ্যুত কেন্দ্রের সকল কাজ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুত কেন্দ্রের বাহিরে স্থানীয় শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়েছেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে। র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।