রাতের আঁধারে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামতের ঢালাইয়ের কাজ করার অভিযোগ ওঠেছে।
স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, উপজেলার ভেলাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয় সরকার। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য আফছার আলী প্রকল্পটির চেয়ারম্যান হিসেবে তা বাস্তবায়ন করছেন। ওই প্রকল্পে বিদ্যালয়ের বারান্দা পাকাকরনে ঢালাইয়ের কাজ দেয়া হয়। কিন্তু সেই কাজ স্থানীয়দের চোখ ফাঁকি দিয়ে নামমাত্র কাজ করতে বারান্দার ঢালাই কাজ করা হয় মধ্যরাতে। ঢালাইয়ের নিচে সলিংয়ে ইট ও খোয়া দেয়ার কথা থাকলেও শুধু সিমেন্ট আর বালুর মিশ্রন দিয়ে মাটি ঢেকে দেয়া হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবক আজিজুল ইসলাম জানান, ব্যবস্থাপনা কমিটির অযোগ্যতার কারণে লেখাপড়ার মান ও অবকাঠামোগত ভাবেও ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যালয়টি। কুকুরের অবাদ বিচরনে অনিরাপদ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দিনদিন কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। বারান্দা ঢালাইয়ে ইট নয় বালু ও সিমেন্টের ঘোলা দিয়ে মাটি ঢেকে দেয়া হয়েছে। বাঁধা দিয়েও রাতের আঁধারের কাজ বন্ধ করাতে পারেনি বলেও দাবি করেন তিনি।
স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি জানান, আগে পড়াশোনার মান ভাল থাকায় ৪/৫শত শিক্ষার্থীর কোলাহলে মুখর ছিল বিদ্যালয়টি। ইংরাজী বিষয়ের স্নাতকত্তোর নেয়া প্রধান শিক্ষক যোগদান করে নিজেই কোন ক্লাস নেন না। ফলে দিনদিন শিক্ষার মান নিম্নমুখি হয়ে পড়ে। তাই তিনি তার সন্তানকে পাশের বে-সরকারী কিন্ডার গার্টেন স্কুলে ভর্তি করেছেন। তার মত অনেকই সন্তানদের স্থান্তারিত করায় এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা অর্ধেকেরও নিচে নেমেছে।
ভেলাবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, মধ্যরাতে হঠাৎ বিদ্যালয়ের বারান্দায় বিদ্যুতের আলো দেখে এগিয়ে গিয়ে দেখি বারান্দা ঢালাইয়ের কাজ করছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি আফছার আলী। রাতে না করে দিনের আলোয় কাজ করতে বলেছি। কিন্তু তারা সে কথা রাখেনি। কাজের মান ভাল নয় তাই রাতে করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভেলাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্ধ পাওয়ায় মিটিং করে কমিটি গঠন করি। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটি কাজ করছেন। তবে রাতে কাজ করার বিষয়টি তার জানা নেই।
ভেলাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ইউপি সদস্য আফছার আলী বলেন, দিনে শ্রমিক পাওয়া যায় না। তাই রাতে ঢালাই করে নেয়া হয়েছে। নিম্নমানের কাজ নয়। ৩ইঞ্চির ঢালাই দিয়ে তবে ঘোলা দেয়া হয়েছে।
আদিতমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ১২৬টি বিদ্যালয়ে নুন্যতম ৫০ হাজার টাকা হারে স্লিপের ও ২০টিতে ২লাখ ও ১৭টিতে দেড় লাখ টাকা হারে ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। রাতের আঁধারে কাজ করার কোন খবর তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধান শিক্ষকদেরও ক্লাস নেয়ার কথা রয়েছে। এর ব্যর্তয় ঘটলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।