ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার নওপাড়া বাজারের শতবছরের বাসিন্দা হরিজন সম্প্রদায়ের দশটি পরিবারের প্রায় শতাধিক মানুষ অর্থ অভাবে, অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। তাদের পূর্বপুরুষের চামড়ার কাজ কালের বিবর্তনের বিলুপ্ত হওয়ায়, সংসারে উপার্জনক্ষম পুরুষ ব্যক্তিরা বেকার হয়ে পড়েছে। অন্য কোনো পেশার কাজ না জানায় তাদের সংসারে অভাব অনাটন লেগেই থাকে। যার ফলে তাদের ভাগ্যে দিনে এক বেলা খাবার জোটে আবার কোনো দিন নাও জোটে।
সরোজমিন পরিদর্শনে গেলে ঐ গোত্রের প্রবিন ব্যক্তি দীনেশ রবি দাস বলেন- বর্তমানে চামড়ার কাজ না থাকায় আমরা বেকার হয়ে পড়েছি, সংসার চালাতে গিয়ে বিভিন্ন এনজিওর নিকট থেকে,স্থানীয় কারবারিদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিতে হয়, সময় মতো টাকা পরিশোধ করতে না পারায় বিভিন্ন ভাবে আমাদেরকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। সরকারি ভাবে আপনারা কোনো সাহায্য পান না, এমন প্রশ্ন করলে, দীনেশ রবি দাস আক্ষেপ করে বলেন গত ৬৫ বছরেও হামরা কোনো ছরকারি ছাহায্য পাই নাই। একই কথা বললেন- লাভলু রবি দাস, বেচন রবি দাস, মালতি রানী, সাগরি, দীপ্তি রানী, লক্ষিরানী, ও ডাবলু রবি দাস। স্বামী হারা চার সন্তানের জননী সাগরী রবি দাস বলেন- আমাদের কোনো কাজ না থাকায় এতিম চারটি সন্তান নিয়ে কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে দিন কাটচ্ছি। অর্থের অভাবে আমার বড় মেয়ে পিংকির লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান ও ব্যবসায়ী মোঃ ওয়াদুদ হোসেন পল্লব বলেন- এই হরিজনদের বাঁচাতে হলে সরকারকে এদের পাশে দাড়াতে হবে তারা আরও বলেন- সরকারের ঘোষিত পশ্চাদ পদ নৃ-তাত্তিক জনগোষ্ঠির আওতায় এনে এই হরিজনদে তালিকা ভূক্ত করতে হবে। হরিজন পাড়ায় ঘুরে দেখা যায় অর্থ কষ্ট, রোগ শোক, স্থানীয় কারবারিদের নির্যাতন সব কিছু মিলে মনে পড়ে গেল মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ¥া নদীর মাঝি গল্পের চিরচেনা সেই কথাটি- ঈশ্বর থাকেন ও পাশের ভদ্র পল্লিতে। জেলে পাড়ায় তাকে খুজে পাওয়া যাবেনা। ঠিক তেমনি হতদরিদ্র, অবহেলিত, অনাহারে ভুভুক্ষ হরিজনদের পল্লীতে সমাজ সেবক, দানবীরদের দেখা মেলেনা।