ঝালকাঠির রাজাপুর ও কাঁঠালিয়ায় শিশু পাচারকারীদের ভয়ে ও আতঙ্কে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে উপস্থিতির হার কমে গেছে। বর্তমানে স্কুলগুলোতে শিশু শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় শিশুদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে এ অঞ্চলে শিশু পাচারকারীদের (কল্লাকাটা/ছেলেধরা) খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ কারনে অনেক অভিভাবক সন্তানকে নিজেরাই স্কুলে নিয়ে আসেন আবার অসচেতন অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে যেতেও বারন করছেন বলে জানা গেছে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। এদিকে গত ২৫ জুন মঙ্গলবার রাতে জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলা থেকে মো. মিরাজ হোসেন (৩০) নামে এক সন্দেহভাজন শিশু পাচারকারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। এ খবর জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে শিশু পাচারের খবরও আরো জোড়ালো হয়। ফলে অধিকাংশ অভিভাবকরাই শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের উপস্থিতি হার অনেকটাই কমে গেছে। কাঁঠালিয়া থানার মো. এনামুল হক স্থানীয়দের বরাতে জানান, আওরাবুনিয়া এলাকার একটি বাড়িতে রাত ৮টার দিকে ঘরের জানালা দিয়ে চেতনা নাশক স্প্রে নিক্ষেপ করে মিরাজ। এর পর মিরাজকে ধাওয়া করে স্থানীয়রা। বাইসাইকেলে করে পালানোর একপর্যায়ে সাতানি বাজার এলাকায় এসে ধরা পড়ে সে। তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে ওই শিশুর পরিবার। এদিকে শিশু পাচারকারী আটকের খবরে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের উপস্থিতি অনেকটাই কমে গেছে। রাজাপুরের বড়ইয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. রেজোয়ান হোসেন জানান, শিশু পাচারকারীদের ভয়ে বিদ্যালয়ে শিশুদের উপস্থিতি কমে গেছে। এ বিদ্যালয়ে ১১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর আগে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে ৮০-৯০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকত। অথচ গত ২- দিন ধরে উপস্থিতি কমে গেছে। বর্তমানে মাত্র ৩৯ জন শিক্ষার্থী স্কুলে আসে। রাজাপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খানম জানান, গত তিন দিন ধরে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি কমে গেছে। বিশেষ করে শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা। রাজাপুর সদরের চঞ্চল কর্মকার জানান, তার ছেলে শিশু শ্রেণির ছাত্র। গত দুই দিন ধরে তাকে সাথে লোক দিয়ে বিদ্যালয়ে পাঠাতে হচ্ছে। বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝালকাঠি পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিন জানান, কাঁঠালিয়ায় শিশু পাচারকারী সন্দেহে এক যুবককের আটকের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।