রাজশাহীর বাঘায় ভূট্টা ক্ষেত থেকে মুখে মবেল মাখানো সেই লাশ দাফনের ২২ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী এক্রিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত আমান আজিজ এর উপস্থিতিতে এ লাশ উপজেলার বেড়েরবাড়ি দক্ষিণপাড়া গ্রামের কেন্দ্রীয় গোরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়।
জানা যায়, ১০ জুন সন্ধ্যায় বাঘা থানার পুলিশ চকবাউসা গ্রামের ভূট্টা ক্ষেত থেকে মুখে পোড়া মবেল মাখানো অজ্ঞাত (৪৫) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরের দিন ১১ জুন ওই লাশের পরিচয় মেলে। সে উপজেলার আড়ানী পৌরসভার পাঁচপাড়া গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধী মনির হোসেনের স্ত্রী গোলাপি বেগম।
কিন্তু ১২ জুন সকাল ১০টায় আড়ানী রেল স্টেশন থেকে গোলাপি বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয়। সেখানে গোলাপি বেগমের মামা শাকিব হোসেন, শাশুড়ি মরিয়ম বেগম, ভাসুর মাজদার রহমান, জা সাজেদা বেগম এর উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসল গোলাপি বেগমকে সনাক্ত করা হয়। তার কাছে থেকে জাতীয় পরিচয় পত্রের সাথে নামের মিল পাওয়া যায় তার পরিচয় মেলে।
এ দিকে ৯ জুন কাউবে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় উপজেলার সারদা চারাবটতলা এলাকার সুরুজ মিয়ার স্ত্রী দোলেনা বেগম। তারপর থেকে বিভিন্নস্থানে খোঁজ খবর করে পায়নি। এক মাধ্যমে ১২ জুন দুপুরে জানতে পারে বাঘা থানায় একটি লাশ পাওয়া গেছে এবং দাফনও সম্পূর্ণ হয়েছে। পরে পুলিশের কাছে ছবি ও আলামত দেখে সুরুজ মিয়া তার স্ত্রীকে চিনতে পারে এবং এ লাশ তার স্ত্রী দোলেনা বেগমের দাবি করে। ওই দিনই সুরুজ মিয়া বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে তার স্ত্রীর লাশ কিনা এ বিষয়ে তার ছেলে শান্ত ইসলামের সাথে ডিএনএ পরীক্ষা করে লাশ সনাক্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী এক্রিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত আমান আজিজ, বাঘা থানার ওমি মহসীন আলী, আড়ানী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রভাষক রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন মেম্বরসহ স্থানীয় ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী এক্রিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত আমান আজিজ বলেন, লাশ উত্তোলন শেষে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
বাঘা থানার ওসি মহসীন আলী বলেন, লাশটি প্রথমে গোলাপি বেগমের পরিবার সনাক্ত করে দাফন করে। পরে গোলাপি বেগমকে জীবিত পাওয়া যায়। ওই দিনই সুরুজ মিয়া নামের এক ব্যাক্তি ছবি ও আলামত দেখে তার স্ত্রী দোলেনা বেগমের লাশ দাবি করে। প্রকৃত দোলেনা বেগমকে চিহিৃত করতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করেন। তবে এ বিষয়ে পুলিশ বাদি হয়ে একটি ইউডি ও গোলাপি বেগমের মামা শাকিব হোসেন এবং দোলেনা বেগমের লাশের দাবিকৃত স্বামী সুরুজ মিয়া বাদি হয়ে পৃথকভাবে দুটি হত্যা মামলা করেন। শেষ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশ অবশেষে সানাক্ত হবে আশা করছি।