সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ল্যাপরা ঘাস চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই এ ঘাস চাষকে বাণিজ্যিক হিসেবে গ্রহণ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। রায়গঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল ঘুরে ও প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার দেয়া তথ্য মতে এ উপজেলায় প্রায় ৩’শ একর জমিতে ল্যাপরা ঘাসের আবাদ হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক দশক যাবত প্রাণি সম্পদ বিভাগের প্রানান্তকর প্রচেষ্টায় কৃষক ও গো-খামারীদের ল্যাপরা ঘাস চাষে উদ্বুদ্ধ করনের লক্ষ্যে বিভিন্ন সভা সেমিনার ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আজকের এই সফলতা। পলি মাটিতে এ ঘাস বেশ ভাল জন্মে বিধায় নদীর চরাঞ্চলে ল্যাপরা ঘাসের আবাদ বেশি পরিলক্ষিত হয়। আবার অনেকে নিজস্ব গো খাদ্যের চাহিদা মেটাতে ঘাস চাষের জন্য জমি না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বড় বড় কাঁচা-পাকা রাস্তার ঢালে, পুকুরের পাড়ে, বাড়ির আঙ্গিনায় এ ঘাসের আবাদ করছে। এভাবে ঘাসের আবাদ করে অনেক হতদরিদ্র পরিবার দু’চারটি গাভী ও ষাঁড় পালন করে অর্থনৈতিকভাবে স¦াবলম্বী হয়ে উঠেছে। যদিও রাস্তার ঢালে ঘাস চাষ ক্ষতির দিকটাও নেহাতই কম না। তেলিজানা গ্রামের আব্দুল বারীক ও আব্দুল হালিম, নলছিয়া নিজপাড়া গ্রামের শাহিদ আলীর সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা ল্যাপরা ঘাস চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে ভাল সফলতা অর্জন করেছি। এরা প্রাথমিকভাবে ১ বিঘা বা তারও কম পরিমাণ জমিতে ল্যাপরা ঘাস চাষ শুরু করে। বর্তমানে এরা অন্যের জমি লিজ গ্রহণ করে প্রায় ৫/৬ বিঘা জমিতে ঘাস চাষ করে এবং তা বাজারে বিক্রি করে দারিদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে। ১ বিঘা জমিতে বছরে ৫/৬ বার ঘাষ সংগ্রহ করা যায়। এতে ঘাস বিক্রি হয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা। খরচের মাত্রা অন্যান্য আবাদের চেয়ে কম হওয়ায় লাভের পরিমাণ বছরে ৬০/৭০ হাজার টাকা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ পলাশ কান্তি দত্ত ঘাসের উপকারিতা সম্পর্কে জানান, এক সময় গো-খামারীরা গরু মোটাতাজা করণে বিভিন্ন ক্ষতিকর ওষুধ, গো-খাদ্য হিসেবে খুদের ভাত, খৈল, ভুষি ও খড়ের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকত। যার মধ্যে খুদের ভাত গরুর পেট ফাঁপা থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগের আক্রান্ত করে থাকে। এখন খামারীরা ল্যাপরা ঘাসের সাথে খড় মিশিয়ে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করায় গরুর স্বাস্থ্যহানি থেকে রক্ষা করা সহ পশুর মাংস ক্ষতিকর জীবাণু থেকে মুক্ত থাকছে। রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড. ইমরুল হোসেন তালুকদার ইমন যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ অনাবাদি জমি রয়েছে। যেগুলোতে ঘাস চাষ করে আমাদের যুব সমাজ গো-খামার, ব্ল্যাক গোট খামার স্থাপন করে নিজেরা স্বাবলম্বি হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্যদেরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারে। চাকুরির পিছনে না ঘুরে যদি যুব সমাজ এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে তবে তারা নেশা মুক্ত থেকে দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।