জরাজীর্ণ একটি টিনশেড ঘরে চলে পাঠদান কার্যক্রম। আর সামান্য বৃষ্টি হলেই ওই ঘরটিতে অনবরত পানি পড়তে থাকে। অপরদিকে টিনের ভাঙা চাল দিয়ে ঘরের ভেতরে আসে সূর্যের রশ্মি। এমন প্রতিকূলতার মধ্যেই চলছে শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠদান। আর এমনই পরিস্থিতিতে ব্যাহত হচ্ছে নেত্রকোনার কলমাকান্দার দক্ষিণ মুন্সিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম।
মঙ্গলবার সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দক্ষিণ মুন্সিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি টিনশেড ভাঙা ঘরে চলছে বিদ্যালয়ের পাঠদান। ঘরটিতে রয়েছে মাত্র ছোট্ট দুটি কক্ষ। আর তাতে নেই কোনো দরজা-জানালা। টিনের চালে রয়েছে অগণিত ফুটো। একটু বৃষ্টি হলে চালের ফুটো দিয়ে পড়া পানিতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভিজে যায়। আর অধিক ঝড় বৃষ্টিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েন। বিদ্যালয়ের অফিসে রক্ষিত জরুরী কাগজপত্রেরও নেই কোন নিরাপত্তা। কক্ষের অভাবে অফিস কক্ষেই চলছে পাঠদান কার্যক্রম। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য নেই স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট। এসব কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিনদিনই কমছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে .৪০ শতাংশ জমিতে নির্মিত হয় বিদ্যালয়টি। এতে প্রধান শিক্ষকসহ মোট শিক্ষক রয়েছে চার জন। দুই শিফটে চলে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২০জন।
এ নিয়ে কথা হলে শিক্ষার্থীর অভিভাবক সেলিম আহম্মেদ রহিম বলেন, স্কুল ঘরটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে আমরা সারাক্ষণ টেনশনে থাকি। তাই বিদ্যালয়টিতে একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে আমরা এলাকাবাসী জোর দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়েশা আক্তার বলেন, নতুন ভবনের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে একটি ও চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে আরো একটি আবেদন করেছি। তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় শ্রেণীকক্ষ সংকটে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম প্রতিনিধিকে বলেন, উপজেলায় যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলো তালিকা করে জেলা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের টেন্ডারও হয়েছে বলে তিনি জানান।