রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী টুকুরিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর নামক স্থানে জয়ন্তিপুর ঘাটে করতোয়া নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণকাজ চলছে। পল্লী সড়কে গুরুত্বপুর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ ব্রীজটি নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে কাজটির তদারকি করছেন। ব্রীজটি নির্মানে ৩০ কোটি ৩১ লাখ ১৪ হাজার ৭৭০ টাকা চুক্তিমুল্যে ২৯ কোটি ৪৮ লাখ ৯৪ হাজার ২০৩ প্রাক্কলিক মুল্য ধরা হয়েছে। চলতি বছরের ২২ ফ্রেব্রুয়ারী পীরগঞ্জ আসনের এমপি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ব্রীজের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পুরাকৌশল প্রযুক্তি লিমিটেড (পিপিএল) কাশেম কনস্ট্রাকশন (কিউসি) জয়েন ভাইচার (জেভি) ৫২ সাত্তার ম্যানশন পঞ্চহালি চট্রগ্রাম ব্রীজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটির নির্মানকাজ করেেছ। উপজেলা প্রকৌশলি মজিবর রহমান জানান, জয়ন্তিপুর ঘাট-গোপিনাথপুর সড়কে ১৫০০ মিটার চেইনেজে জয়ন্তিপুর ঘাটে করতোয়া নদীর উপরে ২৯৪ মিটার দৈর্ঘ্য ৯.৮মিটার প্রস্থে ফুটপাতসহ ওই ব্রীজের নিমার্ণ কাজ চলছে। এতে ৮০টি পাইল, ৭টি স্প্যান, ৬টি পিলার ও ২টি এবাটমেন্ট রয়েছে। এ ছাড়া রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সীমানায় ৩৮৭ মিটার ও দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা সীমানায় ৪৫০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। দ্রুত ব্রীজটি নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ৫৮টি পাইল, ৩টি পিলারের বেজ ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। টুকুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মন্ডল জানান, প্রধানমন্ত্রী রংপুরের বধুমাতা জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর তরফমৌজা উচ্চবিদ্যালয় মাঠের জনসভায় জয়ন্তিপুর ঘাটে ব্রীজ নির্মাণের প্রতিশ্রতি দেন। এ ব্রীজ নির্মানের ফলে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ, বিরাহিমপুর ও রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জনসাধারণের দীর্ঘদিনের দাবি পুরনসহ দুর্ভোগ-ভোগান্তি থেকে পরিত্রান পাবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ব্যবসা বানিজ্যে উন্নতি ঘটবে। এলাকার কৃষকদের কৃষিজাতপণ্য সহজে পরিবহনের ফলে নিকটতম হাট-বাজারে বিক্রিতে ন্যায্যমুল্য নিশ্চিত হবে। নবাবগঞ্জ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সৈয়দপুর-মির্জাপুর মৌজার টিন মিস্ত্রি রফিকুলের ছেলে নুর ইসলাম, সত্তর বছরের বৃদ্ধা একই গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে আবদুর রহিম, দারিয়া হলাইজানা মৌজার আকবর আলীর ছেলে শরিফ উদ্দিন, পীরগঞ্জ উপজেলার জয়ন্তিপুরের তৈয়ব উদ্দিনের ছেলে শামীম, দেনতুল্লাহ’র ছেলে দেলদার একই গ্রামের মহন্ত সরকারের ছেলে অনন্ত সরকার, নৌকা যোগে ঘাট পেরিয়ে নবাবগঞ্জগামী মোটরসাইকেল আরোহী ব্যবসায়ি ভেন্ডাবাড়ির আবদুর রাজ্জাকের ছেলে ফিরোজ, ঘাটের যাত্রী চৌধুরী গোপালপুরের প্রিয়াংকা, মানষীসহ অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানান, পীরগঞ্জ-নবাবগঞ্জ-বিরাহিমপুরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আত্বীয়তা ও ব্যবসায়িক কাজে ঘাট পারাপারে ভোগান্তিতে রয়েছে। ব্রীজটি নির্মিত হলে যোগাযোগ সহজ হবে এবং রংপুর-দিনাজপুরের অঞ্চলের প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্পের দায়িত্বে নিয়োজিত এলজিইডি কনসালটেন্ট প্রকৌশলি হেমায়েত হোসেন ও রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলি রেজাউল হক জানান, বিগত বছরের ৪ জুন থেকে ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর ৯১৫ দিনে নির্মাণ কাজ সমাপ্তির মেয়াদকাল রয়েছে। দ্রুতগতিতে কাজ চলমান থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই সেতুটি জনসাধারণ চলাচলে উম্মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আবহাওয়া প্রতিকুলে গিয়ে নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে উঠে গেলে সেক্ষেত্রে নির্মাণ কাজ নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত কাজ সমাপ্তিতে অপেক্ষা করতে হবে।