আকস্মিক মিষ্টি নিয়ে সদ্য বাংলাদেশ পুলিশে চাকুরী পাওয়া সুষ্মিতা দেব শর্মার বাড়ীতে উপস্থিত হলেন দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম। সুষ্মিতার বাড়ী দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ৯ নং মঙ্গলপুর ইউপি’র উত্তর বিষ্ণপুর গ্রামে। দরীদ্র ঘরের কন্যা সুষ্মিতার পিতা মনতোষ দেবশর্মা গত ১ বছর আগে পরলোকগমন করেন। মাতা মমতা রাণী দেবশর্মা একজন গৃহিনী। ২ ভাই ১ বোনের মধ্যে মেঝো সুস্মিতা। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ এর ইংরেজি বিভাগে ১ম বর্ষ অনার্স পড়-য়া ছাত্রী সে। ৩ জুলাই দিনাজপুর জেলায় বাংলাদেশ পুলিশ এর কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সে মনোনীত হয়। জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম এর সাথে এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুশান্ত সরকার, বিরল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ এ টি এম গোলাম রসুল, কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বজলুর রশীদ প্রমূখ।
পুলিশে চাকুরী পাওয়া সুস্মিতা জানান, সবাই জানে বর্তমান সময়ে টাকার বিনমিয় ছাড়া সরকারি চাকুরী পাওয়া অসম্ভব। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে একটিও টাকা কোথাও কোন অবৈধ লেনদেন করতে হয়নি। বাবা না থাকায় চাকুরীর আবেদন, পুলিশ লাইনের মাঠে দাড়ানো, লিখিত ও অন্যান্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার সম্পূর্ণ কাজ একাই করতে হয়েছে। কিন্তু একা গিয়েও তিনি কাঙ্খিত ১০৩ টাকার আবেদন ফরমের মাধ্যমে চাকুরী পেয়েছেন। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞতা স্বরূপ চাকুরী জীবনে কোন প্রকার অবৈধ লেনদেন বা অবৈধ টাকা হাতাবেন না বলেও জানান।
সুস্মিতার মা মমতা রাণী জানান, সুস্মিতার পড়ালেখার প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ আগে থেকেই। সে পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধূলাতেও বিদ্যালয় জীবনে সফল ছিল। তাই পুলিশে চাকুরীর জন্য সে একাই কোন প্রকার বিনিময় ছাড়াই নিজ যোগ্যতা ও পুলিশ সুপারের সততায় চাকুরীটি পেয়েছে।
ঐ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেরাজুল ইসলাম জানান, অভাবের সংসারে স্বামীর অবর্তমানে মেয়ের লেখা পড়া চালিয়ে যাচ্ছিল সুস্মিতার মা। যার ফলে আজ সুস্মিতা সম্মানজনকভাবে মেধা ও যোগ্যতার মাধ্যমে পুলিশে চাকুরী পেয়েছে।
ইউপি সদস্য আম্পা রাণী দেবশর্মা জানান, পুলিশের চাকুরী যে টাকা ছাড়াই পাওয়া যায় তাঁর অন্যতম উদাহরণ সুস্মিতা। এবার দিনাজপুর জেলায় সুস্মিতারমত অন্যান্য সকলে অবৈধ লেনদেন কিংবা তদবীর ছাড়াই চাকুরী পেয়েছে শুনে তিনি আনন্দিত ও জেলা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞ বলে জানান।