লালমনিরহাটে তিাস্তা নদীর পানি শুক্রবার রাত ৯টার পর থেকে বিপদ সীমার ৪৪ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীর পাড়ের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে উঠছে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) রাত ১০টা থেকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তিস্তার চরের লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে জেলা প্রশাসন থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। একই সাথে তিস্তা ব্যারাজ ও চরাঞ্চল এলাকায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
তিস্তা নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেলে তিস্তা ব্যারাজ রক্ষার্থে পাউবো ‘ফ্লাড বাইপাস’ কেটে দিতে পারে। এ বাঁধ কেটে দিলে গোটা লালমনিরহাট জেলার লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়বে বলে পানি উন্নয়ন বোড (পাউবো) নিশ্চিত করেছেন। এতে লালমনিরহাট জেলার শত শত কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতি হবে। ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে তিস্তা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করে। ৪দিন ধরে পানিবন্দী পরিবার গুলো রান্না করতে না পারায় তাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। নতুন নতুন এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় জেলার প্রায় ৩০ হাজার পরিবার এখন পানিবন্দী অবস্থায় দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। তিস্তা নদীর ভয়ঙ্কর রুপ আর গর্জনে পানিবন্দী লোকজনের চোখে ঘুম নেই।
তিস্তা ব্যারাজ দোয়ানী পানি উন্নয়ন বোর্ড’র নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, ভারতের গজলডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা করা যাচ্ছে না। পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জল কপাট খুলে দেয়া হয়েছে। ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা এড়াতে বন্যা কবলিত পরিবারের লোকজনদেরকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে জেলা প্রশাসন থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, আমি বন্যা কবলিত এলাকা গুলো সরেজমিন ঘুরে দেখছি। যেখানে যেভাবে প্রয়োজন সেই ভাবেই সহযোগিতা দেয়া বা করা হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ভেঙে যাওয়া রাস্তা মেরামতের জন্য ৫ হাজার বালুর বস্তা ও জেলায় ৬৮ টন চাল ত্রাণ হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উজানের ঢল ও অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে আমরা সর্তকাবস্থায় রয়েছি। আজ শুক্রবার তিস্তা নদীর পানি সকাল ৬টায় বিপদসীমা অতিক্রম করে ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৪ সেন্টিমিটারের উপর প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে তিস্তা পাড়ের লোকজনদেও মাইকিং করা হচ্ছের