নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার আটটি ইউনিয়নের ২৫০ টি গ্রাম ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা ৫ দিনের পাহাড়ি ঢল ,টানা বর্ষণ ও সুনামগঞ্জ জেলার উব্দি পানিতে শনিবার আরোও নতুন ১০০টি গ্রামসহ ৩৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। দুর্গত অঞ্চলে নারী-পুরুষ শিশুরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন। এতে প্রায় দশ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার সাথে জেলা ও ইউনিয়নের সংযোগ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে বন্যার্ত মানুষের চরম দুর্ভোগ।
উপজেলার মাধ্যমিক ৮টি ও প্রাথমিক ১৫২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালযয়ে পানি ঢুকায় পাঠদান বন্ধ। প্রায় ১৫০০টি পুকুরে ডুবে গেছে। গো খাদ্যের অভাবে কৃষকরা নিরুপায়। দুর্গত অঞ্চলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
নেত্রকোণা - ১ আসনের সংসদ সদস্য মানু মজুমদার (১৩ জুলাই) শনিবার উপজেলার বড়খাপন রংছাতি সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শেষে কলমাকান্দা উপজেলা প্রেসক্লাবে এসে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তিনি সার্বিক চিত্র তুলে ধরে আবেগপ্রবণ ভাষায় বলেন আমি দুর্গত অঞ্চলে মানুষদের কাছে গিয়ে যা দেখেছি। তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি, বসত বাড়ি ঘরে পানি, হাজার হাজার পুকুর ডুবে গেছে, রাস্তাঘাট পানির নিচে। এমনকি বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আমি হতবাক হয়ে পড়েছি। তিনি আরো বলেন দুর্গত অঞ্চলের মানুষদের দুঃখ-কষ্ট অভাব সমস্যা সদয় বিবেচনা করে এ দুর্গত অঞ্চলের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবী জানান।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাত্র ১০ মেট্রিকটন চাল ও ৩০০ শুকনো খাবার প্যাকেট বরাদ্ধ দিয়েছেন। ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্ধ অপ্রতুল থাকায় বন্যার্ত মানুষজন হতাশ।
অপরদিকে উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা বেগম শিমুর নেতৃত্বে বন্যাকবলিত রংছাতি ও সদর ইউনিয়নের দুর্গত মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। কলমাকান্দা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন বাজার বণিক সমিতি।