নদীতে প্রবল স্্েরাত, মূষলধারে টানা বৃষ্টি, চলছে বড় বড় জাহাজ, পাড়ে এসে আছরে পরছে ঢেউ, নদীগর্ভে চলে গেছে কয়েক হেক্টর ফসলী জমি। গত কয়েক মাসে ধীরগতিতে ৬০-৭০ ফুট ভাঙলেও এখন তার গতি আরো বেড়েছে। নদীর পাড় সংলগ্ন রাস্তা গত ২০ দিনে বিলিন হয়ে গেছে। নদীর সীমানা পিলার ২ মাস আগেই হারিয়ে গেছে নদীর অতল গহবরে। বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসী। ফসলী জমির মাঠ পেরিয়ে মাত্র ২ শত মিটার পরেই বাড়িঘর বিভিন্ন স্থাপনা। এলাকাবাসী নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অপর দিকে উপজেলা প্রশাসন বলছেন লোকালয় রক্ষায় তারা নিয়মিত নজরদারী করছেন এবং কোন দূর্যোগ হওয়ার আগেই ব্যবস্থা নিতে উর্ধতনদের অবগত করেছেন। এ চিত্রটি ধলেশ^রী নদীর মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের চান্দের চর গ্রামের।
চান্দের চর গ্রামের কবি সালাউদ্দিন সালমান, কৃষক লাখ মিয়া, কৃষক আবুল কালাম, ব্যবসায়ী সামসুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আবদুল হামিদ ও ছাত্র ইমরান হোসেন জানান, নদী ভাঙ্গনের কবলে রয়েছে ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড। এ এলাকায় বসবাসরত ১২ হাজার মানুষ, এখানে রয়েছে ১৫ টি মসজিদ এর মধ্যে ১৩ টি মসজিদে জুম্মার নামাজ হয়। খাসকান্দি দাখিল মদরাসা ও মদিনাপাড়া কওমী মাদরাসা, চান্দের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পূর্ব চান্দের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কমিউনিটি ক্লিনিক একটি। ৩ টি পাকা ব্রীজ। ২ টি ঈদগাহ ময়দান, এই ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান রয়েছে এখানে। নৌকা ঘাট ৩ টি ও ছোট বাজার রয়েছে ৩টি। এখন থেকে ভাঙ্গন রোধ না করলে এসব অঞ্চল বিলীন হতে যেতে পারে বলে তারা মনে করেন। ভাঙ্গন রোধে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ এখনো কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। স্্েরাতের চাপ আরো বৃদ্ধি পেলে ভাঙ্গন আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে তারা মনে করছেন। এতে করে এ অঞ্চলের কৃষকদের ক্ষতির সম্মূখিন ও সর্বশান্ত হতে হবে, এ অঞ্চলে কৃষিতে ব্যপক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে তারা জানান। বালুচর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড চান্দেরচর গ্রাম ও বাসাইল ইউনিয়নের চরগুলগুলিয়া গ্রাম ভাঙ্গনের কবলে পরেছে।
তারা আরো বলেন যে ভাবে জমি ভাঙ্গতে শুরু করেছে তাতে আমরা আতঙ্কে আছি। যে জমি ভেঙ্গে গেছে তা থাকলে আমরা আরো ভাল থাকতাম। এখানে ৩ ফসলী জমি, ফলন খুব ভাল হয়। নদীটা অনেক দুরে ছিল ভাঙতে ভাঙতে বাড়ির সামনে এসে পরেছে। আর কিছুদিন ভাঙলে বাড়ি ঘর কিছু থাকবে না। গতবার ফসলসহ ভেঙে নদী গর্ভে চলে গেছে। গত কয়েকমাস আগে নদীর সীমানা পিলার ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধি কেউ কিছু করছে না। কুচিয়ামোড়া থেকে বালুচর পর্যন্ত কযেক হাজার মানুষের বসবাস, এদের বেশির ভাগ কৃষক, কৃষিকাজ আমাদের একমাত্র অবলম্বন। কৃষির উপর নির্ভর করে এ মানুষ গুলো জীবিকা নির্বাহ করে। নদীতে জমিগুলো চলে গেলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো।
এ ব্যপারে সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশফিকুন নাহার বলেন, বালুচর ইউনিয়নের ধলেশ^রী নদীতীর ধীর গতিতে ভাঙছে। দেড়/ দুইশত মিটারের পর লোকালয় থাকায় বিষয়টি নিয়মিত নজরদারীতে রাখা হয়েছে। কোন প্রকার দুর্যোগ হওয়ার আগেই প্রতিরোধের ব্যবস্থায় উর্ধতনদের জানিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে বালুচর ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। বিষয়টি নিয়ে আমাদের করণীয় যা আছে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।