অবিরাম বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলের বন্যায় জকিগঞ্জের বীরশ্রীর পীরনগরে কুশিয়ারা নদী এবং বারহালের নূরনগরে
সুরমা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় শত শত মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। রবিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।
সুরমা-কুশিয়ারার পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারার পানি আমলসীদ পয়েন্টে রবিবার সন্ধ্যায় বিপদ সীমার ১৬১ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পীরনগরে ও নূরনগরে এলাকায় কুশিয়ারা বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় প্রচুর বাড়ীঘরে পানি উঠেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। দেখা দিয়েছে গো খাদ্য সংকট। গরু ছাগল হাঁস মুরগী নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দীরা। বীরশ্রী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম চৌধুরী জানান, পীরনগর গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ এখন পানি বন্দী। অসহায় অন্তত ১০/১২টি পরিবারের সদস্যরা উঠেছেন চেয়ারম্যানের পীরনগরের বাড়িতে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঠিক সংখ্যা নির্ণয় না করা হলেও অন্তত ৩০০ পরিবার বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। বারহাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ জানান, নূরনগরের ভাঙ্গনে কমপক্ষে ৫০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
নদীর বাঁধ ভাঙ্গার মারাত্মক ঝুঁিকতে রয়েছে উপজেলা বড়চালিয়া, ছবড়িয়া, রারাই, মানিকপুর, রসুলপুরসহ প্রায় ১৫টি পয়েন্ট। এসকল স্থানে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসন বালুর বস্তা দিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছেন। রবিবার রারাই গ্রামে শতাধিক মানুষ প্রশাসনের সহযোগিতায় বাঁধ মেরামত করেছেন। স্থানীয়রা জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে এসব বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হবে না। এসব স্থান দিয়ে বেড়ীবাঁধে ভাঙ্গন দেখা দিলে তলিয়ে যাবে গোটা উপজেলা।
জকিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন কুমার সিংহ,পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার বাঁধ রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কাজে এগিয়ে আসছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় অধিবাসীরা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন কুমার সিংহ জানান, বীরশ্রী ও বারহাল ইউনিয়নের জন্য ১০ টন চাল বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তা বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।