জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে গত ২১ জুলাই রবিবার বিকল ৩টা নাগাত ২৪ ঘন্টায় ৩০ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদ সীমার ১০০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যমুনা নদী পানি কিছুটা কমলেও ব্রক্ষপুত্র নদের পানি তেমন কমেনি। ফলে জেলার ব্রক্ষপুত্র নদ ঘেঁষা বকসিগঞ্জ ও জামালপুর সদর উপজেলায় পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামালপুর সদর উপজেলায় বেশ কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। জামালপুর-টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কের জামালপুর সদর উপজেলার তিতপল্লা এলাকায় দুটি স্থানে বন্যার পানিতে তলিয়ে পানির স্ত্রোতে যানবাহন চলাচলে চরম বিঘœ ঘটছে। বন্যার পানির তোড়ে একটি কালভার্ট ধ্বসের আশংকাা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া জামালপুর-সরিষাবাড়ী সড়কের প্রায় ১০০ মিটার ভেঙে যাওয়ায় ফলে জামালপুর-সরিষাবাড়ী সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
এ দিকে বন্যা সংক্রান্ত জেলা প্রশাসক কার্য্যালয়ের প্রেস ব্রিফরিং এ জানাগেছে জেলার সাতটি উপজেলার সর্বশেষ ৬২টি ইউনিয়ন ৮টি পৌর সভার মধ্যে ৭টি বন্যা কবলিত হয়েছে। সারা জেলায় ২২লাখ ৯২হাজার ৬৭৪জন অধ্যসিত লোক সংখ্যার মধ্যে ৫লাখ ৬২হাজার ১৮০টি পরিবারের রয়েছে তার মধ্যে ২লাখ ৫৬হাজার ৫৩০টি পরিবারের মোট ১২লাখ ৮৩হাজার ৭৯০জন লোক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৭ হাজার ২৫০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণরূপে এবং ৪৫হাজার ৫৮০টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১২হাজার ৪৩টি নলকূপ এবং ৬১ হাজার ২৭টি ল্যাট্রিন বন্যার পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১০.৭৫কিঃমিটার সম্পুর্ণ এবং ৬০.৫০কিঃমিটার আংশিক পাকা রাস্তা এবং ১৭.২৫কিঃ মিটার সম্পূর্ণ এবং ২০০কিঃমিটার আংশিক্ষ কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ২৮টি ব্রীজ/কালভাটসহ প্রায় ২১কিঃমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৬৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,১৬৫টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি বিভাগ সুত্রে জানাযায় সারা জেলায় বীজতলা,আখ,পাট,ভূটÍা,কাঁচা তরিতরকারিসহ ২৪ হাজার ২১০ হেক্টর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে সারা জেলায় ২২ হাজার ৪৮৬টি পুকুরের মধ্যে বন্যা কবলিত হয়েছে ৮হাজার ৪২৫টি পুকুর ডুবে মাছ বেরিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারও মৎস চাষীরা। সারা জেলায় বন্যার পানিতে পড়ে ৬জনের মৃত্যু কথা সরকারী ভাবে উল্লেখ করা হলেও মিডিয়ায় প্রকাশ এ পর্যন্ত মারা গেছে মোট ১৪জন।
প্রেস ব্রিফরিং এ আরো জানানো হয়েছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত সারা জেলায় ৯৮০ মেঃটন চাল এবং ১৭লাখ ৩০হাজার নগদ টাকা ত্রান বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফ চাল ৫হাজার ৮৯ মেঃটন বরাদ্ধ দিয়েছেন যা ঈদের আগে বিতরণ করা হবে।
সরা জেলায় সরকারি ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তোলনায় ত্রান খুবই অপ্রতুল। তাই বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণের জন্য চলছে হাহাকার। অনেকের গোলায় ধান-চাল আছে। রান্না করার সুযোগ নেই, বাড়ি ঘরে অথৈই পানি। খেতে পারচ্ছে না, অনেকেই না খেয়ে দিন অতিবাহিত করছেন। এজন্য বন্যার্তদের মাঝে চলছে ত্রানের জন্য হাহাকার। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির বিশেষ প্রয়োজন। সরকারী ত্রানের পাশাপাশি ব্যক্তি/বেসরকারী সাহার্য্য সংস্থার গুলোর এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন সুধী মহল। অপরদিকে বন্যা দুর্গত এলাকায় মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি গো খাদ্যে চরম সংকট দেখা দিয়েছে।