পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ও মৃগী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শেরপুর পৌর এলাকার কয়েকটি মহল্লার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে শেরপুর সদর উপজেলার পোড়ার দোকান এলাকায় কজওয়ের (ডাইভারশন) ওপর দিয়ে প্রবল বেগে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে শেরপুর-জামালপুর মহাসড়ক দিয়ে জামালপুর হয়ে উত্তরাঞ্চলের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, গত ৪৮ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পুরাতন ভাঙন অংশ দিয়ে বন্যার পানি দ্রুতবেগে প্রবেশ করায় চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ায় শনিবার থেকে কুসুমহাটি বাজার থেকে বলাইয়েরচর হয়ে ব্রক্ষপুত্র ব্রিজ পর্যন্ত বিকল্প রাস্তায় হালকা যানবাহন চলাচল করলেও বলাইয়েরচরের কিছু অংশে বন্যার পানি রাস্তা ছুঁই ছঁুঁই করছে। দ্রুত পানি না কমলে বা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ওই সড়কেও যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
জেলা প্রশাসকের বন্যা বিষয়ক কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলায় পানি অনেকটা নেমে গেলেও শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী, কামারেরচর, বলাইয়েরচর, বেতমারী-ঘুঘুরাকান্দিও চরশেরপুর ইউনিয়নের আরও কিছু এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়ে পড়ছে। এতে সদর উপজেলায় বন্যার ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণও ক্রমেই বাড়ছে।
এদিকে ব্রহ্মপুত্রসহ মৃগী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শেরপুর পৌর এলাকার মোবারকপুরের কইনাপাড়া, দমদমা কালীগঞ্জের উত্তরপাড়া, উত্তর গৌরীপুর, মীরগঞ্জ বারাকপাড়া (নিমতলা), কসবা শিবউত্তর, কাচারীপাড়ার নামাপাড়া, ভাটিপাড়া, পূর্ব শেরী, দিঘারপাড়, তাতালপুর ও শেখহাটির কামারিয়া মহল্লার বেশ কিছু অংশ প্লাবিত হয়ে পড়েছে। জেলা কারাগার মোড় থেকে থানাঘাট রাস্তার ব্রিজ দিয়ে মৃগী নদীর পানি প্রবেশ করায় উত্তর গৌরীপুর এলাকায় প্লাবিত ঘরবাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। ওই এলাকাসহ নিমজ্জিত পৌর এলাকায় পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে। পৌর এলাকার বন্যা দূর্গত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন বলেন, পৌরসভার নিম্নাঞ্চলের কিছুকিছু এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘবে শীঘ্রই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
রবিবার (২১ জুলাই) দুপুরে শেরপুরের শ্রীবরদীতে জেলা পুলিশের উদ্যোগে বন্যা কবলিত ভেলুয়া ইউনিয়নের পানিবন্দি লক্ষীডাংগী গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের শতাধিক মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় রেঞ্জ ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি বিপিএম। এ সময় শেরপুরের পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম পিপিএম ও পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে আজ বিকেলে শেরপুর সদর উপজেলার চর পক্ষীমারী ইউনিয়নের ডাকপাড়া, কুলুর চর ও চর পক্ষীমারী এলাকার বন্যাকবলিত ২শ পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব। এ সময় শেরপুর জেলা প্রশাসন পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।